পাতা:ঐতিহাসিক চিত্র (প্রথম বর্ষ) - নিখিলনাথ রায়.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রণজিৎ সিংহ ও ইংরাজ । NSN রণজিৎ বিবাদী স্থানসমূহে অশ্বারোহী প্রেরণ করিলেন। দুই মাস ধরিয়া লুণ্ঠনাদি চলিতে লাগিল। ফরিদকোট ও আম্বালা অধিকৃত হইল। থানেশ্বর ও মালেরকোটল হইতে কর আদায় করিলেন, এবং পাতিয়ালার রাজার সহিত উষ্ণীষ বদল হইল। এই কাৰ্য্য অন্যের নিকট ভ্রাতৃভাবের সূচক হইলেও র্তাহার নিকট ইহা ভদ্রভাবে নিৰ্য্যাতনের চিহ্নস্বরূপ ছিল। মেটকাফ রণজিতের নিকট এই সকলের কৈফিয়ৎ চাহিলেন, কিন্তু কোন রূপ আদেশ না পাওয়া পৰ্য্যন্ত কিছুই করিতে পারিলেন না। আদেশ আসিলে তিনি মহারাজকে জানাইলেন যে, তাহার গবর্ণমেণ্ট শতদ্রুর দক্ষিণপারস্থ শিখদিগের রক্ষণাবেক্ষণ করিবেন স্থির করিয়াছেন, এবং তন্নিবন্ধন ব্রিটিশ সৈন্য লুধিয়ানায় । আসিতেছে। রণজিৎ ইহাতে সৈন্যসম্বন্ধে দু একটি বিষয় জিজ্ঞাসা করিয়া বলিলেন—“পূর্বে ইংরাজের সীমা যমুনা পৰ্য্যন্ত ছিল,এখন শতদ্রু পৰ্য্যন্ত হইয়াছে এবং শীঘ্রই বিপাশায় যাইবে। ব্রিটিশের কিছুতেই ক্ষুন্নিবৃত্তি হয় না।” বোধ করি কথাটি নিতান্ত অসঙ্গত নয় মনে করিয়া দূত উপহাস নীরবে সহ। করিলেন। ক্রমশঃ ক্রুদ্ধ মহারাজের উত্তেজনায় ঘুর্ণায়মান এক চক্ষু এবং কষ্টপ্রশমিত ক্ৰোধে তাহার বসন্তরোগক্লিষ্ট মুখমণ্ডলের তরঙ্গায়িত ভাবিদর্শনে অনুমান হইতেছিল, যেন তিনি তঁহার সম্মুখস্থ ধীর আচঞ্চল মানবটিকে আঘাত করিতে উদ্যত হইয়াছেন। কিছু ক্ষণ উভয় যুবকই-(মেটকাফের বয়ঃক্রম তখন ২৩ বৎসর ও রণজিতের ২৮ বৎসর মাত্র) উভয়ের মুখের দিকে চাহিয়া নীরবে বসিয়া রহিলেন। হঠাৎ রণজিৎ ছুটিয়া ঘর হইতে বাহির হইয়া গেলেন এবং নিম্নে প্রাঙ্গনে উপস্থিত হইয়া একটি অশ্বে আরোহণ করিলেন। পরে স্তম্ভিত ইংরাজ যুবকের চক্ষের সম্মুখে চতুর্দিকে ঘুরিতে লাগিলেন। এইরূপে আত্মসংযম লাভ করিয়া মহারাজ নীচের একটি ঘরে প্রত্যাগত হইয়া মন্ত্রীর দ্বারা জানাইলেন যে, তিনি ব্রিটিশ গবর্ণমেণ্টের অভিলাষের প্রতিকুলে কিছু করিবেন না। সন্ধ্যার পর সুরার সাহায্যে অধিকতর সাহসিক হইয়া তিনি ইংরাজের এই প্ৰস্তাব হইতে-যাহা র্তাহার নিকট অন্যায় আবদার বলিয়া বোধ হইয়াছিল-ষ্ঠাহীর সম্মতি ফিরাইয়া ।