পাতা:ওপারের আলো - দীনেশচন্দ্র সেন.pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ওপারেন অনালো গোঁসাই। ভাবলেন, আমি এতদিন নিজের অসার কথায় এত বিভোর ছিলাম, সাধুবাবাজির যে এই অপূৰ্ব্ব গানের শক্তি আছে, তা” আমার কাছে অজ্ঞাত ছিল—একদিন ও ওঁকে গান করতে বলি নাই। । সাধুবাবা গাইলেন “আমার ধৈৰ্য্যশালা হেমাগার, গুরুগৌরব সিংহদ্ভাব ধরম-কপাট ছিল তায় । বংশীরব বজাঘাত, পড়ে গেল। অকস্মাণ ২ সমভূমি করুল আমায় ! আমার দস্তুশালে মত্ত হাতি, বাধা ছিল দিবা রীতি ক্ষিপ্ত কৈল কটাক্ষ অস্কুশ, দম্ভের শিকল কাটি, আবেশে লুকাল চুটি পালাইয়া গেল কোন দেশে। ' বাবাজির মুখের এই গান শুনে---গোসাঁইয়ের মনে এক যুগান্তর উপস্থিত হ’ল । গুরু-গৌরব, ধৰ্ম্মের দপী, প্ৰভৃতি সাংসারিক ভাবে পূর্ণ মন যেদিন বংশীবাব প্রথম শুনল, সেদিন যেন সংসম্বর-ধান্মের উপর বজাঘাত হ’ল । তঁর মধুর আহবান শুনলে-রাজার কাছে রাজপুরীর সিংহদ্বার তুচ্ছ হয়ে যায়। বংশীরব একদিকে মধুর, আর একদিকে উহা বাজ । দম্ভে পরিপূর্ণ মনে তো নিজের কথাই বড় কথা ছিল— তিনি যে দিন ডাকলেন, সেদিন দন্তু কোথায় চলে গেল ! তার চোখের ইঙ্গিতে মন বিনয়ে পূর্ণ হ’ল-দম্ভ-অহঙ্কার কোথায় থাকবে ? এ গান তো তার সঙ্গে বাবাজির পার্থক্যটি স্পষ্ট করে দেখাচ্ছে, গোসাঁই মূৰ্ত্তিমান দম্ভ, প্ৰতিষ্ঠালোভী,- আর বাবাজি অহংজ্ঞান শূন্য মূৰ্ত্তিমান বিনয় ও প্ৰেম । C3