পাতা:কজ্জলী - পরশুরাম (১৯৪৯).pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
বিরিঞ্চিবাবা

 নিবারণ পুনরায় পায়ের ধুলা লইল এবং তাহা চাটি-বার ভান করিয়া ভক্তদের মধ্যে গিয়া বসিল।

 নিতাইবাবু চুপি চুপি পরমার্থকে বলিলেন—‘ব্যাপার দেখলে? নিবারণটা আসবামাত্র বাবার নজরে প'ড়ে গেল, আর আমি-ব্যাটা দেড় ঘণ্টা হা ঁক'রে ব'সে আছি। একেই বলে বরাত। এইবার একবার উঠে গিয়ে পা জড়িয়ে ধরব, যা থাকে কপালে।’

 যাঁরা ভূমিসাৎ হইয়া পড়িয়া ছিলেন তাঁদের মধ্যে একটি স্থুলকায় বৃদ্ধ ছিলেন। তাঁর পরিধানে মিহি জরি-পাড় ধুতি, গিলে-করা আদ্ধির পাঞ্জাবি, তার ভিতর দিয়া সরু সোনার হার দেখা যাইতেছে। ইনি বিখ্যাত মুৎসদ্দী গোবর্ধন মল্লিক, সম্প্রতি তৃতীয়পক্ষ ঘরে আনিয়াছেন। গোবর্ধনবাবু আস্তে আস্তে উঠিয়া করজোড়ে নিবেদন করিলেন—'বাবা, প্রবৃত্তিমার্গ আর নিবৃত্তিমার্গ এর কোন্‌টা ভাল?'

 বাবা ঈষৎ হাস্যসহকারে বলিলেন—“ঠিক ঐ কথা তুলসীদাস আমায় জিজ্ঞেস করেছিল। আমরা আহার গ্রহণ করি। কেন করি? ক্ষুধা পায় ব’লে। কি আহার করি? অন্নব্যঞ্জন ফলমূল মৎস্য মাংসাদি। আহার করলে কি হয়? ক্ষুধার নিবৃত্তি হয়। ক্ষুধা একটা প্রবৃত্তি,

৩১