পাতা:কথামালা - ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (সচিত্র).pdf/৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথামালা
৫৩

সে সমুদয় নিবেদন করিলে, জলদেবতা তৎক্ষণাৎ নদীতে মগ্ন হইলেন, এবং এক স্বর্ণনির্ম্মিত কুঠার হস্তে করিয়া, তাহার নিকটে আসিয়া, জিজ্ঞাসা করিলেন, এই কি তোমার কুঠার? সে বলিল, না মহাশয়, এ আমার কুঠার নয়। তখন তিনি পুনরায় জলে মগ্ন হইলেন, এবং এক রজতনির্ম্মিত কুঠার হস্তে লইয়া, তাহার সম্মুখে আসিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, এই কি তোমার কুঠার? সে বলিল, না মহাশয়, ইহাও আমার কুঠার নয়। তিনি পুনরায় জলে মগ্ন হইলেন, এবং তাহার লৌহনির্ম্মিত কুঠারখানি হস্তে লইয়া, তাহাকে জিজ্ঞাসিলেন, এই কি তোমার কুঠার? সে, আপন কুঠার দেখিয়া, যার পর নাই আহলাদিত হইয়া বলিল, হাঁ মহাশয়, এই আমার কুঠার। আমি অতি দুঃখী, আর কুঠার পাইব, আমার এ আশা ছিল না; কেবল আপনকার অনুগ্রহে পাইলাম; আপনি আমায় জন্মের মত কিনিয়া রাখিলেন।

 জলদেবতা, প্রথমতঃ তাহার নিজের কুঠারখানি তাহার হস্তে দিলেন; পরে, তুমি নির্লোভ, সত্যনিষ্ঠ ও ও ধর্মপরায়ণ; এজন্য আমি তোমার উপর অতিশয় সন্তুষ্ট হইয়াছি; এই বলিয়া, তাহার গুণের পুরস্কার স্বরূপ, সেই স্বর্ণনির্মিত ও রজতনিৰ্মিত কুঠার দুইখানি তাহাকে দিয়া, অন্তর্হিত হইলেন। সেই দুঃখী ব্যক্তি অবাক্ হইয়া,