পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬০

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৫৬
কথা-চতুষ্টয়।

 মা আশ্চর্য্য হইয়া কহিলেন, তুই আবার ক’টি মেয়ে দেখ্‌লি?

 অবশেষে অনেক ইতস্ততর পর প্রকাশ পাইল প্রতিবেশিনী শরতের মেয়ে মৃন্ময়ীকে তাঁহার ছেলে পছন্দ করিয়াছে! এত লেখাপড়া শিখিয়া এম্‌নি ছেলের পছন্দ!

 প্রথমে অপূর্ব্বর পক্ষে অনেকটা পরিমাণ লজ্জা ছিল, অবশেষে মা যখন প্রবল আপত্তি করিতে লাগিলেন তখন তাহার লজ্জা ভাঙ্গিয়া গেল। সে রোখের মাথায় বলিয়া বসিল মৃন্ময়ীকে ছাড়া আর কাহাকেও বিবাহ করিব না। অন্য জড়পুত্তলী মেয়েটিকে সে যতই কল্পনা করিতে লাগিল ততই বিবাহ সম্বন্ধে তাহার বিষম বিতৃষ্ণার উদ্রেক হইল।

 দুই তিনদিন উভয়পক্ষে মান অভিমান অনাহার অনিদ্রার পর অপূর্ব্বই জয়ী হইল। মা মনকে বোঝাইলেন যে, মৃন্ময়ী ছেলেমানুষ এবং মৃন্ময়ীর মা উপযুক্ত শিক্ষাদানে অসমর্থ; বিবাহের পর তাঁহার হাতে পড়িলেই তাহার স্বভাবের পরিবর্ত্তন হইবে। এবং ক্রমশঃ ইহাও বিশ্বাস করিলেন যে, মৃন্ময়ীর মুখখানি সুন্দর। কিন্তু তখনি আবার তাহার খর্ব্ব কেশরাশি তাঁহার কল্পনাপথে উদিত হইয়া হৃদয় নৈরাশ্য পূর্ণ করিতে লাগিল তথাপি আশা করিলেন দৃঢ় করিয়া চুল বাঁধিয়া এবং জব্‌জবে করিয়া তেল লেপিয়া কালে এ ক্রটিও সংশোধন হইতে পারিবে।

 পাড়ার লোকে সকলেই অপূর্ব্বর এই পছন্দটিকে অপূর্ব্ব