পাতা:কথা-চতুষ্টয় - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
সমাপ্তি।
৫৯

কোথায় গেল কোথায় গেল খোঁজ পড়িল। অবশেষে বিশ্বাসঘাতক রাখাল তাহাকে তাহার গোপন স্থান হইতে ধরাইয়া দিল। সে বটতলায় রাধাকান্ত ঠাকুরের পরিত্যক্ত ভাঙ্গা রথের মধ্যে গিয়া বসিয়াছিল।

 শাশুড়ি, মা এবং পাড়ার সমস্ত হিতৈষিণীগণ মৃন্ময়ীকে যেরূপ লাঞ্ছনা করিল তাহ পাঠকগণ এবং পাঠিকাগণ সহজেই কল্পনা করিতে পারিবেন!

 রাত্রে ঘন মেঘ করিয়া ঝুপ্‌ ঝুপ্ শব্দে বৃষ্টি হইতে আরম্ভ হইল। অপূর্ব্বকৃষ্ণ বিছানার মধ্যে অতি ধীরে ধীরে মৃন্ময়ীর নিকট ঈষৎ অগ্রসর হইয়া তাহার কানে কানে মৃদুস্বরে কহিল, “মৃন্ময়ী তুমি আমাকে ভালবাস না?”

 মৃন্ময়ী সতেজে বলিয়া উঠিল, “না! আমি তোমাকে কখ্‌খনই ভাল বাসব না।” তাহার যত রাগ এবং যত শাস্তিবিধান সমস্তই পুঞ্জীভূত বজ্রের ন্যায় অপূর্ব্বর মাথার উপর নিক্ষেপ করিল।

 অপূর্ব্ব ক্ষুণ্ণ হইয়া কহিল, “কেন আমি তোমার কাছে কি দোষ করেছি?” মৃন্ময়ী কহিল, “তুমি আমাকে বিয়ে করলে কেন?”

 এ অপরাধের সন্তোষজনক কৈফিয়ৎ দেওয়া কঠিন। কিন্তু অপূর্ব্ব মনে মনে কহিল, যেমন করিয়া হউক্ এই দুর্বোধ্য মনটিকে বশ করিতে হইবে।

 পরদিন শাশুড়ি মৃন্ময়ীর বিদ্রোহী ভাবের সমস্ত লক্ষণ