পাতা:কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
১৮
কথা

মাঝি কহে পুনর্বার—“দেবতার ধন
কে যায় ফিরায়ে ল’য়ে এই বেলা শোন্।”
ব্রাহ্মণ সহসা উঠি কহিলা তখনি
মোক্ষদারে লক্ষ্য করি-“এই সে রমণী
দেবতারে সঁপি দিয়া আপনার ছেলে
চুরি করে নিয়ে যায়!”—“দাও তারে ফেলে”
একবাক্যে গর্জি উঠে তরাসে নিষ্ঠুর
যাত্রী সবে। কহে নারী “হে দাদাঠাকুর
রক্ষা করো, রক্ষা করো।” দুই দৃঢ় করে
রাখালেরে প্রাণপণে বক্ষে চাপি ধরে।


ভর্ৎসিয়া গর্জিয়া উঠি কহিলা ব্রাহ্মণ
“আমি তোর রক্ষাকর্তা! রোষে নিশ্চেতন
মা হয়ে আপন পুত্র দিলি দেবতারে,
শেষকালে আমি রক্ষা করিব তাহারে!
শোধ্ দেবতার ঋণ! সত্য ভঙ্গ ক’রে
এতগুলি প্রাণী তুই ডুবাবি সাগরে!”


মোক্ষদা কহিল “অতি মূর্খ নারী আমি,
কী বলেছি রোষবশে,—ওগো অন্তর্যামী
সেই সত্য হলো? সে যে মিথ্যা কতদূর
তখনি শুনে কি তুমি বোঝোনি ঠাকুর।