শুধু কি মুখের বাক্য শুনেছ দেবতা।
শোনোনি কি জননীর অন্তরের কথা।”
বলিতে বলিতে যত মিলি মাঝি দাঁড়ি
বল করি রাখালেরে নিল ছিঁড়ি কাড়ি
মা’র বক্ষ হতে। মৈত্র মুদি দুই আঁখি
ফিরায়ে রহিল মুখ কানে হাত ঢাকি,
দন্তে দন্ত চাপি বলে। কে তাঁরে সহসা
মর্মে মর্মে আঘাতিল বিদ্যুতের কশা,
দংশিল বৃশ্চিকদংশ।—“মাসি, মাসি, মাসি”
বিন্ধিল বহ্নির শলা রুদ্ধ কর্ণে আসি
নিরুপায় অনাথের অন্তিমের ডাক।
চীৎকারি উঠিলা বিপ্র-“রাখ্ রাখ্ রাখ্!”
চকিতে হেরিলা চাহি মূর্ছি আছে প’ড়ে
মোক্ষদা চরণে তাঁর।—মুহূর্তের তরে
ফুটন্ত তরঙ্গ মাঝে মেলি আর্ত চোখ
“মাসি” বলি ফুকারিয়া মিলাল বালক
অনন্ত তিমির তলে;—শুধু ক্ষীণ মুঠি
বারেক ব্যাকুলবলে ঊর্ধ্ব পানে উঠি
আকাশে আশ্রয় খুঁজি ডুবিল হতাশে।
“ফিরায়ে আনিব তোরে” কহি ঊর্ধ্বশ্বাসে
ব্রাহ্মণ মুহূর্তমাঝে ঝাঁপ দিল জলে।
আর উঠিল না। সূর্য গেল অস্তাচলে
১৩ই কার্ত্তিক, ১৩০৪