পাতা:কথা-রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৪৩

এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
৩৮
কথা


কঠিন শ্যামার মতো কেহ নাহি আর।—
এত বলি দৃঢ়বলে ধরি হস্ত তার
বজ্রসেনে লয়ে গেল কারার বাহিরে।
তখন জাগিছে উষা বরুণার তীরে,
পূর্ব বনান্তরে। ঘাটে বাঁধা আছে তরী।
“হে বিদেশী এসে এসো” কহিল সুন্দরী
দাঁড়ায়ে নৌকার পরে—“হে আমার প্রিয়
শুধু এই কথা মোর স্মরণে রাখিয়ো—
তোমা সাথে এক স্রোতে ভাসিলাম আমি
সকল বন্ধন টুটি' হে হৃদয়স্বামী
জীবনমরণ প্রভু!”—নৌকা দিল খুলি।
দুই তীরে বনে বনে গাহে পাখিগুলি
আনন্দ-উৎসব গান। প্রেয়সীর মুখ
দুই বাহু দিয়া, তুলি ভরি নিজ বুক
বজ্রসেন শুধাইল—“কহ মোরে প্রিয়ে,
আমারে করেছ মুক্ত কী সম্পদ দিয়ে।
সম্পূর্ণ জানিতে চাহি অয়ি বিদেশিনী
এ দীন দরিদ্রজন তব কাছে ঋণী
কত ঋণে।”—আলিঙ্গন ঘনতর করি
“সে কথা এখন নহে” কহিল সুন্দরী।
নৌকা ভেসে চলে যায় পূর্ণ বায়ুভরে
তূর্ণ স্রোতোবেগে। মধ্য গগনের পরে