পাতা:কথা ও কাহিনী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/২১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
কথা

“তােমারি দাসত্বে প্রাণ  আনন্দে করিব দান"
  শিবাজি কহিলা নমি তাঁরে।
গুরু কহে,“এই ঝুলি  লহাে তবে স্কন্ধে তুলি,
  চলে আজি ভিক্ষা করিবারে।”

শিবাজি গুরুর সাথে  ভিক্ষাপাত্র লয়ে হাতে
  ফিরিলেন পুরদ্বারে-দ্বারে।
নৃপে হেরি ছেলে মেয়ে   ভয়ে ঘরে যায় ধেয়ে,
  ডেকে আনে পিতারে মাতারে।
অতুল ঐশ্বর্যে রত    তাঁর ভিখারীর ব্রত,
  এ যে দেখি জলে ভাসে শিলা।
ভিক্ষা দেয় লজ্জাভরে,  হস্ত কাঁপে থরােথরে;
  ভাবে, ইহা মহতের লীলা।

দুর্গে দ্বিপ্রহর বাজে,  ক্ষান্ত দিয়া কর্ম-কাজে
  বিশ্রাম করিছে পুরবাসী।
একতারে দিয়ে তান    রামদাস গাহে গান
  আনন্দে নয়নজলে ভাসি—
“ওহে ত্রিভুবনপতি,    বুঝি না তােমার মতি,
  কিছুই অভাব তব নাহি-
হৃদয়ে হৃদয়ে তবু    ভিক্ষা মাগি ফির, প্রভু,
  সবার সর্বস্বধন চাহি।”