এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশােধ
৪৫
রক্ষী আসি খুলি দিল শৃঙ্খল চকিতে।
বিস্ময়বিহবল নেত্রে বন্দী নিখিল
সেই শুভ্র সুকোমল কমল-উষ্মীল
অপরূপ মুখ। কহিল গদ্গদস্বরে,
“বিকারের বিভীষিকা-রজনীর পরে
করধৃত-শুকতারা শুভ্র-উষা-সম
কে তুমি উদিলে আসি কারাকক্ষে মম—
মুমূর্ষুর প্রাণরূপা, মুক্তিরূপা অয়ি,
নিষ্ঠুরনগরী-মাঝে লক্ষী দয়াময়ী?”
“আমি দয়াময়ী?”- রমণীর উচ্চহাসে
চকিতে উঠিল জাগি নব ভয়ত্রাসে
ভয়ংকর কারাগার। হাসিতে হাসিতে
উন্মত্ত উৎকট হাস্য শােকাশ্রুরাশিতে
শতধা পড়িল ভাঙি। কাদিয়া কহিলা,
“এ পুরীর পথমাঝে যত আছে শিলা,
কঠিন শ্যামার মতাে কেহ নাহি আর।”
এত বলি দৃঢ়বলে ধরি হস্ত তার
বজ্রসেনে লয়ে গেল কারার বাহিরে।
তখন জাগিছে উষা বরুণার তীরে
পূর্ববনান্তরে; ঘাটে বাঁধা আছে তরী।