এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পরিশােধ
৪৭
থেমে গেছে দুই তীরে, জনপদ-বাট
পান্থহীন। বটতলে পাষাণের ঘাট,
সেথায় বাঁধিল নৌকা স্নানাহার-তরে
কর্ণধার। তন্দ্রাঘন বটশাখা-'পরে
ছায়ামগ্ন পক্ষীনীড় গীতশব্দহীন;
অলস পতঙ্গ শুধু গুঞ্জে দীর্ঘ দিন;
পক্কশস্যগন্ধহরা মধ্যাহ্নের বায়ে
শ্যামার ঘােমটা যবে ফেলিল খসায়ে
অকস্মাৎ পরিপূর্ণ প্রণয়পীড়ায়
ব্যথিত ব্যাকুল বক্ষ, কণ্ঠ রুদ্ধপ্রায়,
বজ্রসেন কানে কানে কহিল শ্যামারে,
“ক্ষণিক শৃঙ্খলমুক্ত করিয়া আমারে
বাঁধিয়াছ অনন্ত শৃঙ্খলে। কী করিয়া
সাধিলে দুঃসাধ্য ব্রত কহাে বিবরিয়া।
মাের লাগি কী করেছ জানি যদি প্রিয়ে,
পরিশােধ দিব তাহা এ জীবন দিয়ে
এই মাের পণ।” বন্ত্র টানি মুখােপরি
“সে কথা এখনাে নহে” কহিল সুন্দরী।
গুটায়ে সােনার পাল সুদূরে নীরবে
দিনের আলােকতরী চলি গেল যবে