পাতা:কথা ও কাহিনী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.djvu/৬৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
মূল্যপ্রাপ্তি
৬৩

রাজেন্দ্র প্রসেনজিৎ    উচ্চারি মঙ্গলগীত
  চলেছেন বুদ্ধ-দরশনে—
হেরি অকালের ফুল    শুধালেন, “কত মুল?
  কিনি দিব প্রভুর চরণে।”
মালী কহে, “হে রাজন,    স্বর্ণমাষা দিয়ে পণ
  কিনিছেন এই মহাশয়!”
“দশ মাষা দিব আমি”    কহিলা ধরণীস্বামী,
  “বিশ মাষা দিব” পান্থ কয়।
দোঁহে কহে “দেহাে দেহাে”,    হার নাহি মানে কেহ;
  মূল্য বেড়ে ওঠে ক্রমাগত।
মালী ভাবে, যার তরে    এ দোঁহে বিবাদ করে
  তাঁরে দিলে আরো পাব কত।
কহিল সে করজোড়ে,    “দয়া ক'রে ক্ষমাে মােরে,
  এ ফুল বেচিতে নাহি মন।”
এত বলি ছুটিল সে    যেথা রয়েছেন বসে
  বুদ্ধদেব উজলি কানন।


বসেছেন' পদ্মাসনে    প্রসন্ন-প্রশান্ত-মনে
  নিরঞ্জন আনন্দমুরতি।
দৃষ্টি হতে শান্তি ঝরে,    ক্ষুরিছে অধর-'পরে
  করুণার সুধাহাস্যজ্যোতি।