পাতা:কথা - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৪৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কথা
৪১

দিনশেষে জ্বরতপ্ত দগ্ধ কলেবরে
ছুটিয়া পশিল গিয়া তরণীর পরে
পতঙ্গ যেমন বেগে অগ্নি দেখে ধায়
উগ্র আগ্রহের ভরে। হেরিল শয্যায়
একটি নূপুর আছে পড়ি। শতবার
রাখিল বক্ষেতে চাপি। ঝঙ্কার তাহার
শতমুখ শরসম লাগিল বর্ষিতে
হৃদয়ের মাঝে। ছিল পড়ি একভিতে
নীলাম্বর বস্ত্রখানি,—রাশীকৃত করি
তারি পবে মুখ রাখি রহিল সে পড়ি-
সুকুমার দেহগন্ধ নিশ্বাসে নিঃশেষে।
লইল শােষণ করি অতৃপ্ত আবেশে।
শুক্ল পঞ্চমীর শশি অস্তাচলগামী
সপ্তপর্ণ তরুশিরে পড়িয়াছে নামি’
শাখাঅন্তরালে। দুই বাহু প্রসারিয়া
ডাকিতেছে বজ্রসেন—এস এস প্রিয়া-
চাহি অরণ্যের পানে। হেনকালে তীরে
বালুতটে ঘনকৃষ্ণ বনের তিমিরে
কার মূর্তি দেখা দিল উপচ্ছায়াসম —
“এস এস প্রিয়া!” “আসিয়াছি প্রিয়তম!”
চরণে পড়িল শ্যামা—“ক্ষম মােরে ক্ষম!
গেল না ত সুকঠিন এ পরাণ মম।
তােমার করুণ করে।” শুধু ক্ষণতরে
বজ্রসেন তাকাইল তার মুখপরে,—