পাতা:কপালকুণ্ডলা (দ্বিতীয় সংস্করণ).pdf/১৩২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
কপালকুণ্ডলা।

তিনি ব্রাহ্মণবেশধারিণীর সঙ্গে সঙ্গে গেলেন। ভগ্ন গৃহ হইতে অদৃশ্য স্থানে গিয়া ব্রাহ্মণবেশী কপালকুণ্ডলাকে কর্ণে কর্ণে কহিলেন, “আমরা যে কুপরামর্শ করিতেছিলাম তাহা শুনিবে? সে তোমারই সম্বন্ধে।”

 কপালকুণ্ডলার ভয় এবং আগ্রহ অতিশয় বাড়িল। কহিলেন, “শুনিব।”

 ছদ্মবেশিনী কহিলেন, “তবে যত ক্ষণ না প্রত্যাগমন করি তত ক্ষণ এই স্থানে প্রতীক্ষা কর।”

 এই বলিয়া ছদ্মবেশিনী ভগ্ন গৃহে প্রত্যাগমন করিলেন; কপালকুণ্ডলা কিয়ৎক্ষণ তথায় বসিয়া রহিলেন। কিন্তু যাহা দেখিয়া ও শুনিয়াছিলেন, তাহাতে তাঁহার অতি উৎকট ভয় জন্মিয়াছিল। এক্ষণে একাকিনী অন্ধকার বনমধ্যে বসিয়া আরও ভয় বাড়িতে লাগিল। বিশেষ এই ছদ্মবেশী তাঁহাকে কি অভিপ্রায়ে তথায় বসাইয়া রাখিয়া গেল, তাহা কে বলিতে পারে? হয় ত সুযোগ পাইয়া আপনার মন্দ অভিপ্রায় সিদ্ধ করিবার জন্যই বসাইয়া রাখিয়া গিয়াছে। এইরূপ আলোচনা করিয়া কপালকুণ্ডলা ভীতিবিহ্বল হইলেন। এ দিকে ব্রাহ্মণবেশীর প্রত্যাগমনে অনেক বিলম্ব হইতে লাগিল। কপালকুণ্ডলা আর বসিতে পারিলেন না। উঠিয়া দ্রুত পাদবিক্ষেপে গৃহাভিমুখে চলিলেন।

 তখন আকাশমণ্ডল ঘনঘটায় মসীময় হইয়া আসিতে লাগিল; কাননতলে যে সামান্য আলো ছিল, তাহাও অন্তর্হিত হইতে লাগিল। কপালকুণ্ডলা আর তিলার্দ্ধ