বলিতে বলিতে নবকুমারের কণ্ঠস্বর যাতনায় ৰুদ্ধ হইয়া আসিতে লাগিল। “তুমিত কখন আপনার হৃৎপিণ্ড আপনি ছেদন করিয়া শ্মশানে ফেলিতে আইস নাই।” এই বলিয়া সহসা নবকুমার চীৎকার করিয়া রোদন করিতে করিতে কপালকুণ্ডলার পদতলে আছাড়িয়া পড়িলেন।
“মৃণ্ময়ি!—কপালকুণ্ডলে! আমায় রক্ষা কর। এই তোমার পায়ে লুটাইতেছি—একবার বল যে তুমি অবিশ্বাসিনী নও—একবার বল, আমি তোমায় হৃদয়ে তুলিয়া গৃহে লইয়া যাই।”
কপালকুণ্ডলা হাত ধরিয়া নবকুমারকে উঠাইলেন—মৃদু স্বরে কহিলেন, “তুমিত জিজ্ঞাসা কর নাই।”
যখন এই কথা হইল তখন উভয়ে একেবারে জলের ধারে আসিয়া দাঁড়াইয়াছিলেন; কপালকুণ্ডলা অগ্রে, নদীর দিকে পশ্চাৎ করিয়াছিলেন; তাঁহার পশ্চাতে এক পদ পরেই জল। এখন জলোচ্ছ্বাস আরম্ভ হইয়াছিল, কপালকুণ্ডলা একটা আড়রির উপর দাঁড়াইয়াছিলেন। তিনি উত্তর করিলেন “তুমি ত জিজ্ঞাসা কর নাই।”
নবকুমার ক্ষিপ্তের ন্যায় কহিলেন, “চৈতন্য হারাইয়াছি, কি জিজ্ঞাসা করিব—বল—মৃণ্ময়ি! বল—বল—বল—আমায় রাখ।—গৃহে চল।”
কপালকুণ্ডলা কহিলেন, “যাহা জিজ্ঞাসা করিলে বলিব। আজি যাহাকে দেখিয়াছ—সে পদ্মাবতী। আমি