তিনিও সগর্ব্বে উত্তর করিলেন, “একটীও না এমত বলিতে পারি না।”
প্রস্তরে লৌহের আঘাত পড়িল। উত্তরকারিণী কহিলেন—“তবু ভাল। সেটী কি আপনার গৃহিণী?”
নব। “কেন? গৃহিণী কেন মনে ভাবিতেছ?”
স্ত্রী। “বাঙ্গালীরা আপন গৃহিণীকে সর্ব্বাপেক্ষা সুন্দরী দেখে।”
নব। “আমি বাঙ্গালি; আপনিও ত বাঙ্গালির ন্যায় কথা কহিতেছেন, আপনি তবে কোন্ দেশীয়?”
যুবতী আপন পরিচ্ছদের প্রতি দৃষ্টি করিয়া কহিলেন, “অভাগিনী বাঙ্গালী নহে। পশ্চিন প্রদেশীয়া মুসলমানী।” নবকুমার পর্য্যবেক্ষণ করিয়া দেখিলেন, পরিচ্ছদ পশ্চিমপ্রদেশীয়া মুসলমানীর ন্যায় বটে। ক্ষণপরে তৰুণী বলিতে লাগিলেন, “মহাশয়, বাক্বৈদগ্ধে আমার পরিচয় লইলেন;—আপন পরিচয় দিয়া চরিতার্থ কৰুন। যে গৃহে সেই অদ্বিতীয়া রূপসী গৃহিণী সে গৃহ কোথায়?”
নবকুমার কহিলেন, “আমার নিবাস সপ্তগ্রাম।”
বিদেশিনী কোন উত্তর করিলেন না। সহসা তিনি মুখাবনত করিয়া, প্রদীপ উজ্জ্বল করিতে লাগিলেন।
ক্ষণেক পরে মুখ না তুলিয়া বলিলেন, “দাসীর নাম মতি। মহাশয়ের নাম কি শুনিতে পাই না?”
নবকুমার বলিলেন, “নবকুমার শর্ম্মা।”
প্রদীপ নিবিয়া গেল।