পাতা:কবিতা ও গান.djvu/১২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
কবিতা ও গান।
১১৯

কোথা তোর সে মোহন রূপ?
আজ কেন তোরে দেখে হায়!
প্রেয়সি লো, নয়নে আমার
দারুণ আঁধার হেন ভায়?
আজ কেন ও মুখানি দেখে
নেভে না এ প্রাণের অনল?
বুক ফেটে কেনরে এমন
নয়নে উথলে অশ্রুজল?
যাও, দেবি, যাও দূরে তুমি,
তোমাকে চাহিনা আমি আর;
বনবালা তুই প্রেমময়ি!
আয় বুকে আয় লো আমার!
হৃদি হতে দিব ফেলে তোরে,
নিরাশ্রয় অসহায় বালা?
সহিতে পারিবি কি রে তুই
দারুণ সে নিষ্ঠুরতা জ্বালা?
ঢাল প্রেম, মোহ সুখোচ্ছ্বাস,
ঢাল প্রাণে প্রমোদ উল্লাস;
ডুবায়ে দে হৃদয়ে আমার
সুধার সাগর মাঝে বালা!
যাক নিভে যাক নিভে যাক
প্রাণের এ পিয়াসার জ্বালা!

 

কেন তুমি জ্যোতির্ম্ময়ী বালা!
ডাক মোরে বার বার ক’রে?
হেথায় যে একটি লতিকা
বাঁধিয়াছে মোরে প্রেম ডোরে।
এ হৃদয়-আশ্রয় হইতে
কেমনে গো নিঠুর আঘাতে
ছিঁড়িয়ে ফেলিব তারে দূরে?
বাঁচিবে কি সে আর তাহাতে!
একাকিনী কাঁদিয়া কাঁদিয়া,
অভাগিনী যাবি শুকাইয়া;
ভাবিতেও পারিনে যে আর,
শত বজ্রে জ্বলে উঠে হিয়া।
বনবালা হৃদয়ের রাণি!
আয় হৃদে চায় লো আমার,
ঢাল ঢাল তৃষিত পরাণে
তেমনি প্রণয়-সুধাধার!
হৃদয়ের দেবী ছিলি তুই,
হয়ে থাক হৃদয়ের দেবী;
তোরে ছেড়ে কোথা যাব বল,
মুছিব এ নয়নের জল—
তোমারি চরণ রাঙ্গা সেবি।