পাতা:কমললতা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপদ্রব করেছি, যাবার আগে তাই নমস্কার জানিয়ে তোমার ক্ষমা-ভিক্ষে করতে এলবাম । গোঁসাই বলিলেন, আমরা বৈরাগী মানষি, ভিক্ষে নিতেই পারি, দিতে পারবো না। ভাই ; কিন্তু আবার কাবে উপদ্রব্য করতে আসবে বল ত দিদি ঐ আশ্রমটি ষে আজি অন্ধকার হয়ে যাবে । কমললতা বলিল, সত্যি কথা গোঁসাই-সত্যিই মনে হবে বঝি আজ কোথাও আলো জ্বলে নি, সব অন্ধকার হয়ে আছে। বড়গোঁসাই বলিলেন, গানে, আনন্দে, হাসিতে, কৌতুকে এ কয়দিন মনে হচ্ছিল যেন চারিদিকে আমাদের বিদ্যুতের আলো জ্বলচে--এমন আর কখনো দেখি নি । আমাকে বলিলেন, কমললতা তোমার নাম দিয়েছে নতুনগোঁসাই, আর আমি ওর নাম দিলাম আজি আনন্দময়ী । এইবার তাঁহার উচ্ছৰাসে আমাকে বাধা দিতে হইল, বলিলাম, বড়গোঁসাই, বিদ্যুতের আলোটাই আমাদের চোখে লাগলো, কিন্তু তার কড়কড় ধবনি যাদের দিবােরান্ত্রি কণরলেঞ্চ পাশে, তাদের একটু জিজ্ঞাসা করো ? আনন্দময়ীর সম্পবন্ধে অন্ততঃ রতনের भऊाभउल्ने রতন পিছনে দাঁড়িয়েছিল, পলায়ন করিল। রাজলক্ষী বলিল, ওদের কথা তুমি শানো না গোঁসাই, ওরা দিন-রাত আমায় হিংসে করে। আমার পানে চাহিয়া কহিল, এবার যখন আসবো এই রোগা-পাটকা অরসিক লোকটিকে ঘরে তালাবন্ধ করে আসবো।-ওঁর জ্বালায় কোথাও গিয়ে যদি আমার সাবস্তি আছে ! বড়গোঁসাই বলিলেন, পারবে না। আনন্দময়ী-পারবে না। ফলে আসতে *ात का রাজলক্ষী বলিল, নিশ্চয় পারবো। সময়ে সময়ে আমার ইচ্ছে হয় গোঁসাই, যেন আমি শীগগির মরি। বড়গোঁসাই বলিলেন, এ ইচ্ছে ত বান্দাবনে একদিন তাঁর মাখেও প্রকাশ পেয়েছে ভাই, কিন্তু পারেন নি। হাঁ, আনন্দময়ী, কথাটি তোমার কি মনে নেই ? সখি ! কারে দিয়ে যাবো, তারা কানসেবার কি বা জানে বলিতে বলিতে তিনি যেন অন্যমনস্ক হইয়া পড়িলেন, কহিলেন, সত্য প্রেমের কতটুকুই বা জানি আমরা ? কেবল ছলনায় নিজেদের ভোলাই বৈ তা নয় ; কিন্তু তুমি জানতে পেরেছো ভাই । তাই বলি, যেদিন এ-প্রেম শ্ৰীকৃষ্ণকে অপণ করবে: আনন্দময়ী শনিয়া রাজলক্ষী যেন শিহরিয়া উঠিল, ব্যস্ত হইয়া তাঁহাকে বাধা দিয়া বলিল, এমন আশীবাদ ক’রো না গোঁসাই, এমন যেন না। কপালে ঘটে। বরঞ্চ আশীবাদ করো এমনি হেসে খেলেই একদিন যেন ওকে রেখে মরতে পারি । p কমললতা কথাটা সামলাইয়া লইয়া বলিল, বড়গোঁসাই তোমার ভালবাসার কথাটাই বলেছেন রাজা, আর কিছ নয় । S.