পাতা:কমলাকান্তের পত্র - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২৩).pdf/১৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কমলাকান্তের পত্র

সুরু করে’, ক’নেকে ঘরে পোরা পর্যন্ত (দেনাপাওনার পালাটা বাদ দিয়ে) একটা অভিনয় বই আর কি? ছোট দিদিমণির স্নেহাশীষ আর ছোঠ্ঠাক্‌মা–মণির কাষ্ঠরসিকতা আর বন্ধুমণিদের জ্যাঠামিপূর্ণ বিয়ের Hand-billগুলো থেকে অভিনয় ছাড়া আর কি মনে হয়?

 তবে কি মনোনয়নের কোন মানে নেই? প্রেমের মিলন বলে যাকে, সেটা কি আকাশ-কুসুম বা অশ্বডিম্ব? মনোনয়নের এক-একটা ধারা সব দেশেই আছে; তার রহস্য আর একদিন ভেদ করবার চেষ্টা করা যাবে; তবে মোটের উপর এই কথাটা আজই বলে রাখি যে, চিনিতে ছানাতে মিশিয়ে খোলায় চড়িয়ে তাড়ু দিয়ে নাড়লে দুইএ মিশে ভীমনাগের মণ্ডা হয়; আর চিনি চড়িয়ে রস পেকে এলে, তা'তে ছানা ছেড়ে দিয়ে তা’কে সেই তাড়ু দিয়ে নাড়লেও ভীম নাগের মণ্ডা হয়। উভয়ত্র তাড়ু-নাড়াটাই Common factor আর সেটা খুব Essential factor. এই জীবনে স্ত্রীপুরুষের মিলনের মধ্যেও—এই জীবন-মরণের অগ্নিকুণ্ডের উপর অবস্থিত সংসার কটাহে, সুখ-দুঃখের আলোড়ন-বিলোড়নের মধ্যে, দু’টী হৃদয় যে গলে’ গিয়ে, মিশে গিয়ে, এক হ'য়ে যায় তা'র নাম—প্রেম। যুবক-যুবতীর হৃদয় যে টগ্‌ বগ্ করে' ফুটতে ফুটতে, একটা আর-একটার দিকে ছুটে গিয়ে শান্ত হ’তে চায়, সেটার নাম দেহের, স্নায়ুর উত্তেজনা, তা'র নাম কাম,—সেটা “বরষিল মেঘ” ত “ধরণী ভেল শীতল” সেটার কথা না বলাই ভাল। মোটের মাথায় সেটা স্বার্থপরতা, Egotismএর চূড়ান্ত Egotism; এই Egotism, এই টগ্‌বগে

১৫৬