পাতা:কমলাকান্তের পত্র - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২৩).pdf/১৬৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কমলাকান্তের পত্র

 আমি। তা' সে সুদর্শন কে ঘোরাবে? আর ধনুর্ব্বাণই বা ছুড়বে কে?

 গা। গান্ধীজী আপ্‌নে, ঔর কোন?

 আমি। আর তুমি ঠিক এই রকম আধ-মণ কয়লার বস্তাকে এক-মণ করে' বেচতে থাকবে ত?

 গা। ক্যা করেগা, বাবুজী; গরীব আদমী, খায়গা ক্যায়সে?

 “লে—কোইলা” বলে গাড়ীর উপর গিয়ে লোকটা বসল, আর গাড়োয়ানটা গরুর ল্যাজ নর্ম্মম ভাবে পীড়ন করায় গরু দু'টা দ্রুত পদক্ষেপে চলতে লাগল।

 বলিহারী ভারতবর্ষের মাটিকে! এখানে গুরু আর চেলা, অবতার আর তল্পীদার ছাড়া আর কিছু জন্মাল না। যিনিই সাধারণ মানুষের চেয়ে একধাপ উপরে উঠলেন, তিনিই হলেন অবতার, আর মুমুক্ষু মানুষগুলো সব-কাজ তাঁরই উপর ন্যস্ত করে’ নিশ্চিন্ত হ'ল। হায়রে অবতার, পরের বোঝা বহন করবার এমন মিনি-পয়সার মুটে আর কোন রাজ্যে জন্মায় না!

 আহা! জগৎটা যদি সেই রকমই হ’ত! মাষ্টার পড়া মুখস্থ কল্পে যদি ভক্তিমান ছেলে পাশ হ'ত; ডাক্তার নিজের prescribed ঔষধ সেবন কল্লে যদি ভিজিট দিয়েচে বলে’ রোগী আরাম হ’ত; জজ সাহেব বিচার শেষ করে’ জেলে প্রবেশ করলে তাঁর জয়গান করায়, যদি অপরাধীর প্রায়শ্চিত্ত হ’ত; আর-একজন আফিং খেলে দরিদ্র কমলাকাস্তের যদি, সুধু দোহাই দিয়েই, হাইতোলা নিবারণ

১৬২