পাতা:কমলাকান্তের পত্র - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২৩).pdf/১৬৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মহাত্মার ভুল

হ’ত, তা হ'লে কি মজাই হ’ত! কি সুখের রাজত্বই হ’ত! কিন্তু দুঃখের বিষয়, ভগবান তা’র উল্টা ব্যবস্থাই করে’ রেখেচেন; “যার বিষপাত্র আনি' দেয় তা’র মুখে” এই নির্ম্মম নিয়মেই জগৎটা চলচে। যিনি যে ফলার মেখেচেন তাঁকেই সেটা তুলতে হবে, “বরাতি” কাজ মোটেই চলবে না। আর পরকালেই যদি সব হিসাবের নিকাশ হ’ত, তা হ'লেও কোন গোল হ'ত না; তা হ’লে

সঙ্কীর্ণ এ ভবকুলে দাঁড়ায়ে নির্ভয়ে
করিতাম অবহেলা পরলোকে!

কেন না কেই বা পরলোকের খোঁজ রাখচে। কিন্তু ব্যাপার তা নয়, এইখানেই সব কাজের বোঝাপড়া হ'য়ে থাকে; ব্যক্তির বল, জাতির বল, বোঝাপড়া এই এক পুরুষে, না হয়, দু' পুরুষে, না হয় তিন পুরুষে,—নয়ত পুরুষ-পরম্পরায় যুগ-যুগান্তর ধরে’ তা’র প্রায়শ্চিত্ত চল্তে থাকে। '৫৭ সালের বিশ্বাসঘাতকতার প্রায়শ্চিত্ত ত জগৎ শেঠ থেকে আরম্ভ করে’ চুনোপুঁটী সকলেই করে’ গেছে, আর বাংলার লোক—জনসাধারণ, ঠুঁটো জগন্নাথ হ'য়ে বসে' ছিল বলে', আজও সেই Criminal indifferenceএর প্রায়শ্চিত্ত করচে-যে বিষের পাত্র অপরিণামদর্শী যুবার মুখে ধরে’ ছিল, সেই বিষপাত্র আজও জনে জনে পান করচে।

 কিন্তু কোথা থেকে কোথায় এসে পড়েচি! কয়লাওয়ালার কথা থেকে একেবারে পলাশীতে গিয়ে পড়েচি।

 গান্ধীজীর ভুল হ'য়েচে বল্লে হয়ত দেশসুদ্ধ লোক আমার উপর

১৬৩