পাতা:কমলাকান্তের পত্র - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২৩).pdf/১৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রসন্ন গোয়ালিনীর আধ্যাত্মিকতা

Prasanna এই entente cordiale বর্ত্তমান আছে বলে'।

 আমাদের এই কৃষিপ্রধান দেশের প্রাণ যে চাষী, তা'র চরিত্র দেখে বিচার করলে, প্রসন্ন ঠিক তা’রই মত spiritual প্রমাণ হ'য়ে যাবে। প্রথম সে সাহেব দেখলে পালায়; লোকে বলে ভয়ে, আমি জানি ম্লেচ্ছসংস্পর্শে তা’র spirituality নষ্ট হ'য়ে যাবে এইজন্য। প্রসন্নও, যে পথ দিয়ে সাহেব চলে’ যায়, তিন দিন সে সে-পথে চলে না; লোকে বলে ভয়ে, আমি জানি তা'র ভয়ের বয়স গেছে, তথাপি পাছে ম্লেচ্ছসংস্পর্শে তা’র গয়লা-বংশ অপবিত্র হ'য়ে যায় এই আশঙ্কায় । চাষা ভায়া ধানচাল বেচেন pile করে,’— ডাল বেচেন ধুলা ও মাটি মিশিয়ে ভারি করে', পাট বেচেন জলে ভিজিয়ে; প্রসন্ন দুধ বেচে জল মিশিয়ে, অতএব দুই তুল্য মূল্য। এবং উভয়েই যথাক্রমে গঙ্গাজল ছিটিয়ে গৃহের পবিত্রতা সম্পাদন করেন, এবং লক্ষ্মীপূজা করে', ষষ্ঠীপূজা করে, পুরুত ঠাকুরকে দক্ষিণা দিয়ে আত্মাকে disinfect করেন; অতএব প্রসন্ন আধ্যাত্মিকই প্রমাণ হ'য়ে যাচ্ছে ।

 দেশের ব্যবসাদার—মাড়োয়ারী থেকে আরম্ভ করে’ চুনোপুটি জেলে-মালা পর্য্যন্ত— সবাই “ধম্ম” করেন, পূজা করেন, পাঠ করেন, রামায়ণ শুনেন, কীর্ত্তন করেন, গোমাতার জন্য পিঁজরাপোল করে’ দেন, খট্ম্‌ল পিলান,—আর ঘিয়ে সাপের চব্বি মিশিয়ে মানুষ ভাইকে খেতে দেন, দরকার মত গণেশ উল্টান, ব্যবসা চলতি হ’য়ে গেলেই মালে খাট করেন, পরদ্রব্যেষু লোষ্ট্রবৎ, পরের টাকাকে খোলামকুচি জ্ঞান করে’ তা নিয়ে ছিনিমিনি খেলেন। কামার, কুমার, শেকরা,

১৭১