স্কুল-মাষ্টার না মোশন-মাষ্টার
হনুমান মনে করে' ফেলে, সে জন্য হুপ্, হাপ্, করতে করতে সে বলে’ উঠল— “মহাশয়রা গো, আমি সেজিচি, আমি সত্যিকারের হনুমান নই; অধিকারী মহাশয় আর লোক পান নি তাই আমায় সাজিয়েচেন।” লোকটার বোধ হয় একটু মাথা খারাপ ছিল; নহিলে অভিনয়ের মধ্যস্থলে তা'র স্বরূপ জাহির করবার প্রবৃত্তি আসবে কেন? আমাদের এই সংসার-রঙ্গমঞ্চে যে অভিনয় হয়, রামেরই হ’ক বা রামানুচরেরই হ’ক, তা’কে চিনে নিতে কারও বেশী দেরী হয় না; কিন্তু তাদের মধ্যে এমন মাথা খারাপ কেউ নেই যে অভিনয় পণ্ড করে' নিজমূর্ত্তি জাহির করেন—সেটা অভিনয় শেষে সাজ-ঘরের জন্যই তোলা থাকে।
এই সাজ-ঘরটা কোথা? যেখানে অভিনেতা নিজ মূর্ত্তিতে সপ্রকাশ হ'ন, যেখানে সত্যিকারের আঁতের কালি ফুটে ওঠে, যেখানে শেখা-বুলি বা মুখস্থ partএর আবৃত্তি মোটেই চলে না— সে সাজঘর কোথা? আর কোথা - যেখানে চোগা চাপকান, হ্যাট কোট, তিলক টিকি, গান্ধী-টুপী পর্য্যন্ত খুলে ফেলে “ঘৃত-লবণ-তৈলতণ্ডুল-বস্ত্রেন্ধন-চিন্তয়া” সতত ব্যস্ত থাকতে হয়, যেখানে কথায় চিঁড়ে ভেজে না, চিঁড়ে জোটেও না,—যেখানে যা’র ভিতর যতটুকু শক্তি আছে, যতটুকু বুদ্ধি আছে, যতটুকু হৃদয় আছে, তা’রই মাপে সুখদুঃখ মিলে,— যেখানে ভিতরকার মানুষটা উলঙ্গ হ’য়ে আত্মপ্রকাশ কর্ত্তে বাধ্য হয়,—সেই গৃহস্থলীই হ'ল সাজঘর, সেখানে সাজ খুলে কথা কইতে হয়, সেখানে আর মেকি চলে না! স্ত্রী, পুত্র, জননী, দুহিতার কাছেও যে অভিনয় কর্ত্তে পারে সে
১৮১