কমলাকান্তের পত্র
জবর অভিনেতা বটে; কিন্তু তেমন অভিনেতা স্বর্গে মর্ত্যে নাই।
সেই সাজঘরের বাহিরে এই সংসার-রঙ্গমঞ্চে যা কর তা শোভা পাবে, রাজাই সাজ আর ঋষিই সাজ মানিয়ে যাবে, লোকে মেনেও নেবে; কেননা “কানা, মনে মনে জানা”, সকলেই সেজেচে, তুমিও সেজেচ; অভিনয়ের বাহাদুরী পাবে; যদি নিন্দাই জোটে, সেও অভিনয়ের গলদের জন্য। তাই কাউন্সিলে radical সেজে যে ঘরে এসে ultra conservative হও, সমাজ সংস্কার নিয়ে বক্তৃতা করবার সময়, “ঝাড়ে বংশে” (root and branch) উৎপাটনের উপদেশ দিয়ে, দুধের মেয়ের বিয়ে না দিতে পারলে যে অস্থিরতা প্রদর্শন কর,—কাগজে-কলমে বাল-বিধবার দুঃখে নয়নের জলে বুক ভাসিয়ে, বিধবা ভগ্নীর বা কন্যার দুঃখ যে চোকে ঠেকে না,—কথায় কথায় সাম্য মৈত্রীর ধুয়া তুলে, সামাজিক ব্যবহারে যে ব্রাহ্মণ বলে' ফুলে ওঠ, বা শূদ্র বলে' নাক সিটকাও - এ সব কেবল স্কুল-মাষ্টারের কাছে part মুখস্থ করেছ বলে'। কাউন্সিল বল, বক্তৃতামঞ্চ বল, সংবাদ পত্র বল, কোথাও তোমার ভিতরকার মানুষটা জোর করে' আত্মপ্রকাশ করে না, তুমি সুধু সর্ব্বত্র অভিনয়ই করে' যাও। সকলে তা বুঝতে পারে, তবু অভিনয়ের বাহাদুরী যদি কিছু থাকে তা’রই বাহবা তোমার প্রাপ্য, তাই তুমি পেয়েও থাক।
কিন্তু কথা হচ্চে এই—যাদের দেশের বিদ্যা নিয়ে তুমি নাড়াচাড়া কর, তাদের দেশের ছেলেরা ত সেই বিদ্যা নিয়েই সসাগরা পৃথিবীটাকে মুঠোর ভেতর করবার মত শক্তি লাভ করে; তুমিও
১৮২