পাতা:কমলাকান্তের পত্র - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২৩).pdf/১৯২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কমলাকান্তের পত্র

 এই বহু পুরাতন প্রবচনের মধ্যে gentlemanত্বের সূক্ষ্মতত্ত্ব বর্ত্তমান রয়েছে। মাটি খুঁড়ে যখন পুরুষমাত্রেই শস্য উৎপন্ন করত আর স্ত্রীমাত্রেই চরকায় সূতা কাটত, তখন সমাজে gentlemanএর কোটায় কেউ ছিল না; তখন gentlemanএর সৃষ্টিই হয় নি। Gentlemanটা একেবারেই খুব হালি জিনিষ। কেউ কেউ বলেন ওটা খুব বাজে জিনিষ—সভ্য সমাজ-যন্ত্রের একটা অনাবশ্যক bye-product মাত্র।

 কেউ কেউ বলেন gentleman এর জাত নেই; অর্থাৎ সমাজের যে-কোন শ্রেণীর ভিতরে gentleman পাওয়া যেতে পারে। এ কথা আর যে কোন দেশে সত্য হ’ক, আমাদের দেশে হ'তে পারে না। যাদের বামুন-শূদ্র জ্ঞান আছে, অর্থাৎ হ্রস্ব-দীর্ঘ বোধ আছে, তা'রা একথা কোনক্রমেই মানতে পারে না। যারা ছাতু খায়, বা পকাল ভাত, বা পরিষ্টি ভাত খায়, মালকোছা মেরে কাপড় পরে, বা পাঁচি ধুতি পরে’, সুধু পায়ে, সুধু গায়ে থাকে, তা’রা কি gentleman হ'তে পারে?

 আমি কলকাতায় এক মেসে দিন কতক বাস করে' এসেছি— মেসের পাশে একটা মস্ত তেতলা বাড়ীতে এক মস্ত ধনী পরিবার বাস করতেন, তেতলা ঘরের জানলায় অনেক সময় মা-লক্ষ্মীরা একটু বে-আবরু ভাবে দাঁড়াতেন বসতেন,—২০।২৫টা ওরম্বা যুবাকে ভ্রূক্ষেপ না করে'। একদিন শুনা গেল এক বৃদ্ধা ঝি, বাতায়নে দণ্ডায়মানা এক যুবতীকে বলচে,— সরে এস, মেসের ছেলেগুলোর সুমুখ থেকে—

১৮৬