কমলাকান্তের পত্র
gentleman এই দুইই এক শ্রেণীর জীব। উভয়েই চাষ করে না, মুদিখানার দোকান করে না, চুরি করে না, অথচ পায়ের উপর পা দিয়ে বসে' খায়। উভয়েই নির্ভাবনা, কিন্তু উভয়েই ভিক্ষুক। জমীদার ভিক্ষা করে খাজনা, আর ভিক্ষুক ভিক্ষা করে অনুগ্রহ; একজন জোর করে' চাইতে পারে, আর-একজন আস্তে চায়, ভয়ে ভয়ে চায়—এই তফাৎ। কিন্তু পাওয়াটা সম্পূর্ণরূপে দাতার অনুগ্রহের উপর নির্ভর। প্রজা যদি না দেয়— Civil disobedience করে’ বসে—আর দাতা যদি মুটো না খোলে, তা হ'লে gentlemanও পায় না, mendicantও পায় না। অতএব দুইই এক। তবে লোকে gentlemanকে অর্থাৎ জমীদারকে, ধনীকে একটা জাঁকাল নাম দিয়েচে এবং খাতিরও করে — সেটা একটা কালক্রমাগত কু-অভ্যাস ভিন্ন আর কিছুই নয়।
“খদ্দর পরে’ ভদ্দর’ হবার যে একটা ধুয়া উঠেছে, সেটার ভিতর একটা তত্ত্ব আছে। ব্যবহারিক জীবনে বাহিরটা দেখে খানিকটা ভিতরটার অবস্থা আন্দাজ করে’ নিতে হয়।তা’তে অনেক সময় ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে; আর এই সম্ভাবনার advantage লোকে নিতে চায়; টিকি রেখে, শামুকের খোলকে নস্যির ডিপে করে' পণ্ডিত, লপেটা পরে' বাবু, আর খদ্দর পরে' ভদ্দর —এ সবই একই শ্রেণীর প্রক্রিয়া। “ভদ্রলোক” বলতে এই “কাপুড়ে” ভদ্রলোকই বুঝতে হবে অধিকাংশ স্থলে।
বাঙ্গালা অভিধান খুলে দেখলুম যে, ভদ্র মানে “সুবর্ণ”, আর ভদ্র মানে “ষাঁড়”। এই দুই অর্থের সঙ্গে আমাদের
১৮৮