কমলাকান্তের পত্র
রয়েচে সেটা বড়ই ক্রুর ও মর্ম্মভেদী। দেশাত্মবোধ, বুদ্ধি, উদ্যম, অর্থসম্পত্তি এসকলের সমবায়েও নিরুপদ্রব অসহযোগ কোন কাজেরই হ'ল না। রুরের শ্রমিকদের অর্থ দিয়ে বাঁচিয়ে রাখবার খরচ আর জার্ম্মাণি যোগাতে পাল্লে না; soul–force এর অভাব হয় নি, শেষে অর্থের অভাবেই সব চেষ্টা ব্যর্থ হ'য়ে গেল। প্রতি সপ্তাহে ৩৫,০০০ “trillion marks” হিসাবে অর্থ আর জার্ম্মাণি যোগাতে পাল্লে না, অসহযোগের অবসান হ'য়ে গেল। যাঁরা জার্ম্মাণ যুদ্ধের ইতিহাস পর পর দেখে এসেচেন, তাঁরাই বলবেন জার্ম্মাণি যে দিন হটে গিয়ে Hindenberg lineএর পশ্চাতে আশ্রম গ্রহণ করে' নিশ্চল হ'য়ে বসল, সেই দিনই তা'র পরাভব হ'য়ে গেছে—তারপর যতদিন যুদ্ধ চলেচে ততদিন সে ভেঙ্গেই পড়তে চলেচে; Versailles সন্ধিতে তা’কে একবারে নখদন্তহীন করে' বেঁধে ফেলা হ'ল; ফ্রান্সের দাবী মেটাতে সে পারলে না, বা চাইলে না — যাই বলুন, তারপরই রুর দখল হ’ল ও সেই সঙ্গে নিরুপদ্রব অসহযোগ আরম্ভ হ'ল। ফ্রান্সের টাকা দিতে বাধ্য হ’লে জার্ম্মাণির যে দুর্দ্দশা হবে, তা'র চেয়ে মৃত্যু ভাল, এই ভেবে জার্ম্মাণ-জাতি নিরুপদ্রব অসহযোগকে বরণ করে’ নিয়েছিল; কিন্তু নিরস্ত্রের সে অস্ত্রও নিষ্ফল হ'ল। জার্মাণিতে আজ সে নিস্ফলতার ফল হয়েচে— অরাজকতা, আর খণ্ড খণ্ড হ'য়ে ভেঙ্গে পড়া।
যুদ্ধ-শাস্ত্রের একটা আইন আছে — Victory can only be won as the result of offensive action; এ সত্য সকল যুদ্ধেই প্রমাণিত হ'য়ে গেছে, এ কথার যাথার্থ্য সকল তর্কের অতীত
১৯২