পাতা:কমলাকান্তের পত্র - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২৩).pdf/২৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মেকি

লীলা, ওখানে ও কষ্টি-পাথর চল্‌বে না; ওখানে হৃদয় দিয়ে দেখতে হবে, অনুভূতি দিয়ে বুঝতে হবে। অথবা—ওটা expediency বা practical politics, ওখানে অত idealistic হ’লে চলবে না। তুমি সেখানে কোন্‌টা মানবে; দশজন ভক্তের রোষকষায়িত রক্ত চক্ষুগুলি মান্‌বে, না তোমার বুদ্ধিকে মান্‌বে? তুমি, ‘ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি’ বলে সুখের চেয়ে স্বস্তিকে, বোঝার চেয়ে অন্ধকারকেই বরণ করে’ নিয়ে চির অন্ধকারের প্রতীক্ষায় বসে’ থাকবে!

 প্রসন্ন। তবে উপায় কি স্পষ্ট করে’ বল না, আমি তোমার ও-সব কথা বুঝতে পারি না।

 প্রসন্নর মত ধীর শ্রোতা পাইলে অনেকেই বক্তা হইতে পারিতেন এ কথা আমি মুক্ত কণ্ঠে বলিতে পারি! বুঝিতে পারে না অথচ স্থির হইয়া শুনিয়া যায় এমন শ্রোতা কি মিলে? খুব ভক্তি অথবা খুব ভয়, অথবা দুই’এর সমবায় হইলে, তবে না বুঝিলেও লোক স্থির থাকিতে পারে; এখানে ভয়ও ছিল না ভক্তিও ছিল না, কেন না প্রসন্ন ভয় করিবার মেয়ে নয়,—আর আমার মত নীরস আফিংখোরকে ভক্তি করিবে কে?

 প্রসন্ন। ওগো একটা উপার বল, আমার ষোল ষোল আনা পয়সা জলে যাচ্চে? বেটারা দুধ খেয়েচে না...... খেয়েচে।

 আমি। হাঁ তাই না হয় খেয়েচে। কিন্তু প্রায় বিনামূল্যে, তা’তে তাদের তত বেশী লোকসান হয় নি যত তোমার হয়েচে। তুমি যদি টাকাটী চালাতে চাও ত চিরন্তন প্রথা অনুসারে, চক্ষু বুজিয়া গোটাকতক ভাল টাকার সঙ্গে মেকিটাকে চালাইয়া দাও, সৎসঙ্গে

১৯