কমলাকান্তের পত্র
কাশীবাস, দশটার সঙ্গে চলিয়া যাইবেই। আর যদিই বা ধরা পড়, ‘অবাক করেচে মা’ বলিয়া আকাশ থেকে পড়িও, একটু আর্ত্তনাদ করিও, এবং বারান্তরে অন্যত্র চেষ্টা করিও—নান্যঃ পন্থা বিদ্যতে অয়নায়।
প্রসন্ন। আমার ভয় করে, কে কি বল্বে, কি মনে করবে!
আমি। তা হলে হবে না, বেপরোয়া হ’য়ে কাজ করতে হবে—বুক ফুলিয়ে চল্তে হবে; এটাও একটা মেকি চালাবার প্রকৃষ্ট উপায়। শ্রীকৃষ্ণ বাম হস্তের কনিষ্ঠাঙ্গুলির উপর অবলীলাক্রমে গিরিগোবর্দ্ধন ধারণ করিয়া গোকুলবাসী গোপগোপীগণকে ইন্দ্রদেবের বর্ষণবন্যা হইতে রক্ষা করিয়াছিলেন, একথা বেপরওয়া হ’য়ে যদি বেদব্যাস না বলিয়া, একটু কুণ্ঠিত হইরা বলিতেন, যে শ্রীকৃষ্ণের হাতের কব্জিতে পরদিন একটু চুনে-হলুদ দিতে হইয়াছিল, তাহা হইলে তা’তে তাঁর বলবত্তার কিছুই কমি হইত না বটে, কিন্তু তাহার ফলে সমস্ত ব্যাপারটাই পূর্ণ লীলা না হইয়া বিশ্বাস অবিশ্বাসের দ্বন্দ্ব মধ্যে পড়িয়া যাইত; বেদব্যাসের অসমসাহসিকতার ফলে উহা তর্কের অতীত হইয়া রহিয়াছে। অতএব ভয় পাইলে সব মাটি হইয়া যাইবে।
আর আগে যে সঙ্গ বা সঙ্ঘের কথা বলেছি—অমন মেকি চালাবার উপায় আর দুটি নেই। বুদ্ধদেবের আমল হ’তে আরম্ভ করে’ আজ পর্য্যন্ত কত সঙ্ঘ গেছে এসেছে, অমন মেকি চালাবার আড্ডা আর কোথাও হবে না। সাচ্চা লোক কেউ-না-কেউ সব সঙ্ঘেই ছিলেন, কিন্তু সেটা সঙ্ঘের গুণে নহে, সঙ্ঘ ছিল তাঁহাদের গুণে,
২০