কমলাকান্তের পত্র
প্রসন্ন। সত্যি হলেই বুঝি সব হ’ল? বলার কি একটা ধরণ নেই?
আমি। ধরণ আছে বৈ কি? কিন্তু ধরণটা চাঁচাছোলা করবার জন্যে ত আর সত্যটাকে ডুবিয়ে দেওয়া চলে না।
প্রসন্ন। তা বলে' কানাকে কানা, আর খোঁড়াকে খোঁড়া বলে’ তাদের মনে কষ্ট দেওয়া বুঝি তোমার শাস্ত্র?
আমি। না তা নয়, খোঁড়াকে দেখলেই—ওরে খোঁড়া, আর কানাকে দেখলেই—ওরে কানা বলে’ সম্বোধন করতে হবে, তা বলচি না; কিন্তু তাদের স্বরূপ বর্ণনা করতে গিয়ে ধরণের খাতিরে কানাকে ত পদ্মলোচন, আর খোঁড়াকে গিরি— লঙ্ঘনকারী বলা চলে না। সেটা বিদ্রূপও বটে অসত্যও বটে।
প্রসন্ন। তা বলে' কাটখোট্টার মত কেবল লোকের বুকের উপর দিয়ে চাবুক চালালেই বড় বাহাদুরী হয়, না? লোকে চোয়াড় বলবে না?
আমি। হয়ত বলবে। কিন্তু লোকে যদি বিচার করে’ দেখে ত দেখবে, সৃষ্টির আদি থেকে আজ পর্য্যন্ত দুনিয়া বিনীতদের হাতে যত ঠকেচে চোয়াড়দের হাতে তা’র সিকির সিকিও ঠকে নি, চোয়াড়দের চিনতে, তাদের বক্তব্য হৃদয়ঙ্গম করতে, আবশ্যক হ’লে তা হ’তে আত্মরক্ষা করতে, এক মুহূর্ত্ত বিলম্ব হয় না; কিন্তু বিনীতের মোলামত্বের অতলস্পর্শ ভেদ করতে গিয়ে অধিকাংশ সময়েই হাবুডুবু খেতে হয়, অনেক সময়ে তলিয়ে যেতে হয়। আমি বিনীতদের বড় ভয় করি—তারা বিনয়ের chloroform দিয়ে আমার
২৪