কমলাকান্তের পত্র
etiquette বলে’ কিছু নেই, আদবকায়দা বলে’ কিছুর প্রয়োজনই নেই। সেখানে কায়মনোবাক্যে দেবতারা সত্য ভিন্ন আর কিছুর আদান প্রদান করে না। তাঁরা সত্য বলেন, সত্য শ্রবণ করেন, সত্য মনন করেন, সত্যকে ধারণ করতে পারেন; তাঁদের আদবকায়দা বলে’ যদি কিছু থাকে তাহাও সত্য; একটা অবগুণ্ঠন নয়, আবরণ নয়। আর মানুষ সত্যের অনাবৃত জ্যোতি বরদাস্ত করতে পারে না বলে’ একটু আদবকায়দার কুজ্ঝটিকায় ঢেকে তা’র প্রখৱ রশ্মিজালকে সংহত ম্লান করে’ তাদের ক্লিন্ন হৃদয় ফলকের উপযুক্ত করে’ নেয়। সত্যের প্রকট উজ্জ্বল আলোক সহ্য করবার অক্ষমতাই আদবকায়দার আকাঙ্ক্ষাকে সৃজন করেছে।
প্রসন্ন তখনও নিস্তব্ধ।
আমি বলিলাম—রমণি তোমার বক্ষে হাত দিয়ে দেখ, তথায় যে অমৃতের উৎস তোমার যৌবনের পূর্ণতার সঙ্গে সঙ্গে সঞ্চিত পরিপুষ্ট হ’য়ে সন্তানের আগমন প্রতীক্ষা করেছিল, সন্তানের কুসুমকোমল ওষ্ঠপুটে সংলগ্ন হয়ে সে অমৃতধারা যে তা’র শোণিত প্রবাহ পরিপুষ্ট করে নি, তা’তে কি তোমার নারীজীবন ব্যর্থ হ’য়ে যায় নি? প্রকৃতি তোমাকে নারী করেছিল কেন? পুরুষ বা নপুংসক করে’ নি কেন? তুমি সন্তান ধারণ করবে, পালন করবে, পরিপোষণ করবে, এইজন্য। প্রকৃতি তোমাকে তাঁর সৃষ্টিরক্ষার যন্ত্র হিসাবে সৃজন করেছিলেন। তারপর, সমাজ তোমাকে না-হয় গোপজাতি, অমুকের কন্যা, অমুকের পত্নী করেছে; কিন্তু তুমি যে-জাতিই হও, যারই কন্যা হও, যারই পত্নী হও বা কারো পত্নী না-হও, তুমি মাতা
২৬