পাতা:কমলাকান্তের পত্র - বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় (১৯২৩).pdf/৬২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

১০

খোদার উপর খোদকারী

কেউ বলতে পার, অমি কমলাকান্ত বলে’ আফিম খাই, না আফিম খাই বলে’ আমি কমলাকান্ত? প্রসন্ন দুধে জল দেয় বলে’ সে প্রসন্ন, না প্রসন্ন বলে’ দুধে জল দেয়? কেউ বলতে পার না তা আমি জানি, যেহেতু সৃষ্টিকর্ত্তার কারখানার ভিতরকার খপর কা’রও জানা নেই। কিন্তু তবু তোমরা খোদার উপর খোদকারী করতে ত ছাড়বে না—তোমরা নাক সিঁটকে বলবে—কমলাকান্ত লোকটা এদিকে বেশ বটে, তবে মানুষটা কিছু নয়, যেহেতু সে আফিমখোর। কিন্তু এটা ভেবে দেখনা কেন যে, আফিম খায় না এমন কমলাকান্ত হ’তে পারত কিনা, দুধে জল দেয় না এমন প্রসন্ন হ’তে পারত কিনা? খোদা স্বয়ং এ দুই বস্তুকে এক করেচে—যথা কমলাকান্ত ও অহিফেন, তখন ওদুটা পদার্থের একটা নিত্য সম্বন্ধ আছে বলেই ত। আর ঐ “খোর” বলে’ যে গাল দাও, সেটা বাড়ার ভাগ; যেহেতু কমলাকান্ত ভাত খায়, তা’র বেলা ত কথার সামঞ্জস্য রেখে তা’কে “ভাতখোর” বল না। বলবে “কলৌ অন্নগতাঃ প্রাণাঃ”, ওটা মনুষ্যসুলভ লক্ষণ, অতএব দোষ কিসের? কিন্তু জানবে

৫৬