స\ు করুণ তখন মুরারি ঋষভদেবের সন্ধানে চলিল । দেখিল, ব্রাহ্মণ প্রায় বিগতচেতন হইয়া বিশ্ববৃক্ষতলে বসিয়া আছে । মুরারি ডাকিল, “ঠাকুর ” উত্তর নাই। মুরারি পরীক্ষা করিয়া দেখিল যে ব্রাহ্মণ জীবিত আছে । তখন সে ছলনা করিবার জন্ত কঠিল, “ঘুমাইয়াছে তবে থাক, প্রভাতে, নিজে পথ চিনিয়া ফিরিবে ।” ব্রাহ্মণ ইহা শুনিয়া মুরারির পদযুগল জড়াইয়া ধরিয়া কহিল, “মুরারি, তুমি আমার ধৰ্ম্মপিতা, দোহাই তোমার, বৃদ্ধ ব্রাহ্মণকে এক ফেলিয়া যাইও না। আমি উপদেবতার ভয়ে চক্ষু মুদ্রিত করিয়া বসিয়া আছি।” মুরারি হাসিয়া কহিল, “ভাল, বাইব না। ঠাকুর, তুমি এখন কোথায় যাইবে ?” “কেন প্রাসাদে, মহারাজপুত্র কোথায় ?” “তিনি চলিয়া গিয়াছেন । তুমি ফিরিবে কিরূপে ?” “ঐ জন্তই ত বলিয়াছিলাম যে আমি যাইব না । ঠাকুরাণীকে বলিয়া কলা প্রাতেই এই নগর ত্যাগ করিব । মুরারি, তোমাকে পিতৃ সম্বোধন করিয়াছি, তুমি যদি প্রাসাদের অন্তঃপুর-দ্বারে পোছাইয়া দাও, তাহা হইলে আমি পৌছিতে পারিব।” “ঠাকুর, আমি প্রাসাদে প্রবেশ করিতে পারিব না, চল তোমাকে তৃতীয় তোরণ পর্য্যন্ত রাখিয়া আসি ।” “আমি যে পথ চিনি না ।” “পথ বলিয়া দিব।” “পথ যে অন্ধকার ” “সমস্ত তোরণে আলোক আছে।” “কিন্তু আমার যখন ভয় হইবে ?” “তবে তোমার যাওয়া হইল না।” “মুরারি, তুমি আমার ধৰ্ম্মপিতা নহ, পিতামহ । কোন উপায়ে আমাকে রক্ষা কর, কল্য প্রাতে আমি নিশ্চয় পাটলিপুত্র ত্যাগ কুরিয়া পলাইব ।” “ভাল চল, আমি যাইতে পারিব না ; তোমার সঙ্গে একজন লোক দিতেছি।”
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১০২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।