তৃতীয় পরিচ্ছেদ ) জন্য প্রভূর সহিত হুণযুদ্ধে যাইতে প্রস্তুত।” বিস্মিত হইয়ু অগ্নিগুপ্ত জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমরা কে ?” তাহারা কহিল, “আমরা আর্য্য দেবধরের দাস ।” অগ্নিগুপ্ত বিস্মিত হইয়া দেবধরের মুখের দিকে চাহিলেন । দেবধর কহিলেন, “মহাবলাধিকৃত, পিতা ইহাদিগকে ক্রয় করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু ইহারা আমার বাল্যবন্ধু । যাহারা মরিতে জানে তাহারা দাস নহে। বন্ধুগণ, তোমরা দাস নহ, তোমরা মুক্ত ।” তখন সেনানীগণের চমক ভাঙ্গিল, পাষাণ-সৌধ কম্পিত করিয়া আবার জয়ধ্বনি উঠিল, আবার শত শত খড়গ কোষমুক্ত হইয়া যোদ্ধগণের উষ্ণীষ চুম্বন করিল। দেবধর কহিলেন, “বন্ধুগণ, তোমাদিগের ইচ্ছা পূর্ণ হউক ; কিন্তু তোমরা দাস, স্বাধীন ঘুেনা তোমাদিগকে গুল্মে প্রবেশ করিতে দিবে না । তোমরা কি প্রকারে যুদ্ধে যোগদান করিবে ? মহাবলাধিকৃত, ইহার কি ব্যবস্থা করিবেন ?” অগ্নিগুপ্ত কহিলেন, “চিন্তার বিষয় বটে, ইতিপূৰ্ব্বে কখনও কোন ক্রীতদাস সাম্রাজ্যের সেনাদলে প্রবেশ করিতে চাহিয়াছে বলিয়া স্মরণ নাই । অগ্নিগুপ্তের পশ্চাৎ হইতে স্কন্দগুপ্ত বলিয়া উঠিলেন, “মাৰ্য্য, ইহারা স্বেচ্ছায় যুদ্ধযাত্রা করিতে চাহে, যদি কোন গোল্মিক ইহাদিগকে গ্রহণ না করে, তাহা হইলে আমি স্বয়ং ইহাদিগকে গ্রহণ করিব।” আবার ভীষণ জয়ধ্বনিতে সৌধ কম্পিত হইল। নগরের তোরণে তোরণে তৃতীয় যামের মঙ্গলবাদ্য বাজিয়া উঠিল, তাহ শুনিয়া গোবিন্দগুপ্ত আসন ত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাড়াইলেন এবং কহিলেন, “বন্ধুগণ, রাত্রি শেষ হইয়াছে, হৰ্ণযুদ্ধের পরে যাহারা জীবিত থাকিবে, তাহার। আবার দেবধরের গৃহে মিলিত হইবে।”
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১২৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।