চতুর্থ পরিচ্ছেদ আপ্লির ইহুদল ধূসরবর্ণ সন্ধ্যায় ধূসরবর্ণ পাষাণ-নিৰ্ম্মিত পাটলিপুত্র নগরের কারাগার অতি ভীষণ প্রতীয়মান হইতেছিল । সেই ভীষণদর্শন কারাগুহের একটি অন্ধকারময় কক্ষে এক বিগতযেীবন রমণী স্তস্তে কপোল রক্ষা করিয়া চিন্তা করিতেছিল। দূরে পদশব্দ শ্রুত হইল, রমণী উঠিয়া দাড়াইল । ক্ষণকাল পরে একজন কারারক্ষী সেই কক্ষের লৌহময় কবাট উদঘাটন করিয়া দীপহুস্তে প্রবেশ করিল এবং গবাক্ষের নিকটে দীপ রাখিয়া পুনরায় দ্বার রুদ্ধ করিল। রমণী তখন তাঙ্গর নিকটে আসিয়া অতি ধীরে ধীরে জিজ্ঞাসা করিল, “চিত্রনাথ, কি হইল ?” রক্ষী তদপেক্ষা ধীরে কহিল, “দেবি, সংবাদ শুভ | অবতরণিক আনিয়াছি, নগরতোরণে দ্বিতীয় যামের মঙ্গলবাদ্য আরব্ধ হইলে গবাক্ষপথে কক্ষত্যাগ করিবেন । চন্দ্রসেন নৌকা লইয়া প্রাচীরের নিয়ে অপেক্ষা করিবে । কিন্তু দেবি, আমার দশা কি হইবে ?” রমণী কহিল, “তুমি চিন্তা করিও না, আমি কারাগারের বাহিরে পদার্পণ করিলেই তুমি পলায়ন করিও । আমি কিছুদিন নগর ত্যাগ করিয়া অন্যত্র বাস করিব। তুমি অদ্য রজনীশেষে কপোতিক সঙ্ঘারামে যাইও, তথায় বুদ্ধমূৰ্ত্তির পশ্চাতে আমার সাক্ষাৎ পাইবে। অদ্যই তোমাকে সহস্ৰ সুবর্ণ দীনার দিব, অবশিষ্ট চারি সহস্র দুইদিন পরে পাইবে । কোথায় কি ভাবে পাইবে তাহ কপোতিক সঙ্ঘারামে জানাইব ।” “দেবি, গবাক্ষপথে অবতরণকালে সাবধানে অবতরণ করিবেন।
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১২৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।