চতুর্থ পরিচ্ছেদ >ミ○ বাতায়ন হইতে নদীর জল শতহস্ত নিম্নে, আমি আপনার জন্য পুরুষের পরিচ্ছদ আনিয়াছি; অন্ধকারে বস্ত্র পরিবর্তন করিয়া সাবধানে অবতরণ করিবেন।” এই বলিয়া রক্ষী আধার হইতে খাদ্যের পরিবর্তে পুরুষের পরিচ্ছদ এবং রজুনিৰ্ম্মিত দীর্ঘ অবতরণিক বাহির করিয়া দিয়া প্রস্থানের উপক্রম করিল। তাহা দেখিয়া রমণী কঠিল, “দামোদর শৰ্ম্ম যখন আমাকে ধরিয়াছিল তখন মহাবিহারস্বামী হরিবলও ধৃত হইয়াছিল, তিনি কোথায় আছেন ?” রক্ষা কঠিল, “নাম জানি না, আপনার পাশ্বের কক্ষে একজন বৌদ্ধ ভিক্ষু আছেন আকার দেখিলে বিশিষ্ট ব্যক্তি বলিয়া বোধ হয়।” “তুমিই কি তাহাকে আহার্য্য দিয়া থাক ?” “হঁ৷ ” “রজনীর আহাৰ্য্য দিয়া আসিয়াছ কি ?” “না।” “কখন যাইবে ?” “এখনই।” “র্তাহাকে কোন উপায়ে মুক্ত করিতে পার ?” “অসম্ভব, তাহার কক্ষ চারিদিক হইতে রুদ্ধ।” “আমার কক্ষে আনিয়া রাখিতে পার ?” “পারি, কিন্তু প্রথম যামের শেষে কারাধ্যক্ষ যখন প্রতি কক্ষে বন্দিগণকে প্রশ্ন করিবেন, তখনই তাঙ্গর পলায়নের কথা প্রকাশ হইয়ু পড়িবে।” রক্ষার উত্তর শুনিয়া ইন্দ্ৰলেখা চিন্তিত হইল। ক্ষণকাল পরে সে রক্ষাকে কছিল, “দেখ, মহাবিহারস্বামীর পরিবৰ্ত্তে আর একজন রক্ষীকে তাতার কক্ষে আবদ্ধ করিয়া রাখিলে কি হয় ?” রক্ষী অবনত মস্তকে কিয়ংক্ষণ চিন্তা করিল, তাহার পরে কহিল, “দেবি, যাহা বলিতেছেন তাহা অসম্ভব নহে বটে—কিন্তু বিহারস্বামীর কক্ষে যে থাকিবে তাহার মৃত্যু নিশ্চয় ।” “অসম্ভব, আমি ব্যবস্থা করিয়া দিতেছি । তুমি আর একজন রক্ষীকে বশীভূত কর, আমার পরামর্শ অনুসারে চলিলে তাহার পদে কুশাঙ্কুরও বিধিবে না। অদ্য যে আমাকে সাহায্য করিবে তাহাকে দশ সহস্র সুবর্ণ দীনার দিব।” “আর আমি ?” তোমাকে পঞ্চ সহস্র সুবর্ণ দিতে প্রতিশ্রুত আছি, মহাবিহারস্বামী মুক্ত হইলে আরও পঞ্চ সহস্ৰ দিব ।” “আপনি অপেক্ষা করুন, আমি লোক সংগ্ৰহ করিতে চলিলাম।”
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১২৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।