চতুর্থ পরিচ্ছেদ > ミむ ধীরে ধীরে পাটলিপুত্র অন্ধকারে নিমগ্ন হইল । নগরে সহস্ৰ সহস্র দীপ প্রজ্বলিত হইল, কেবল কারাগৃহ ঘন তমসায় আচ্ছন্ন রচিল । অমানিশার প্রথম যামাদ্ধে মহাবিহারস্বামী হরিবল রমণীর কক্ষে প্রবেশ করিলেন। উভয়ে বাতায়ন-পথে নির্গত হইয়া রজ্জ্বনিৰ্ম্মিত অবতরণিকাবলম্বনে গঙ্গাগর্ভে অবতরণ করিলেন । ভাদ্রমাস, গঙ্গাগৰ্ভ পরিপূর্ণ। শোণের জলরাশি তখন নগরের বহির্ভাগে জাতুৰী-স্রোতের সহিত মিশ্রিত হইয়া প্রবলবেগে সমুদ্রাভিমুখে ধাবিত হইত ; তখন পাটলিপুত্রের নিম্নে গঙ্গাগর্ভে সমস্ত বৎসর তীব্র স্রোত প্রবাহিত হইত। সেই স্রোতের মুখে একখানি ক্ষুদ্র নৌকায় জনৈক খৰ্ব্বাকার পুরুষ অবতরণিকার নিম্নভাগ ধারণ করিয়া অপেক্ষা করিতেছিল । সে রমণী ও পুরুষকে দেখিয়া অ’ফুটস্বরে বলিল, “কে, ইন্দ্ৰলেখা ?” রমণী কহিল, “হুঁ, তুমি চন্দ্রসেন ?” পুরুষ কহিল, “হা, তোমার সঙ্গে আর কে ?” “মহাবিহারস্বামী হরিবল ।” ইন্দ্ৰলেখা ও হরিবল নৌকায় আরোহণ করিলেন, চন্দ্রসেন নৌকা ছাড়িয়া দিল । অতি অল্প সময়ের মধ্যে স্রোতের সাহায্যে নৌক৷ সুদূরবিস্তৃত পাটলিপুত্র নগরের উপকণ্ঠে উপস্থিত হইল। তিনজনে নৌকা ত্যাগ করিয়া নগরে প্রবেশ করিল। সুদীর্ঘ জনশূন্ত পথ অতিবাহিত করিতে করিতে ইন্দ্ৰলেখা চন্দ্রসেনকে জিজ্ঞাসা করিল, “কুমারগুপ্ত কোথায় ?” চন্দ্রসেন কহিল, “স্থান্ধীশ্বরে।” “গোবিন্দগুপ্ত কোথায় ?” “আর সকলে যুদ্ধে গিয়াছে।” “কতদূরে ?” “বহুদূর, বাহলীকদেশে ।” “নগরে কে আছে?” “আর কে,—আমাদের প্রাচীন বন্ধু কৃষ্ণগুপ্ত। ইন্দ্রলেখা, বৃদ্ধ শৃগালের কথাটা জিজ্ঞাসা করিলে না ?” “সে, সে আবার কে ?” “কেন, দামোদর ?” “মহামন্ত্রী কোথায় গিয়াছেন ?” “পুরুষপুরে।” “অনন্ত কোথায় ?” “বৃদ্ধ শৃগালের অনুচরগণ তাছাকে ধরিতে আসিয়াছিল বলিয়া অনন্তাকে দূরে পাঠাইয়া দিয়াছি।” “উত্তম করিয়াছ, কোথায় পাঠাইলে ?” “বারাণসীতে।” “চন্দ্র, আমাকে দুই চারিদিন
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৩১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।