চতুর্থ পরিচ্ছেদ ১২৭ হরিবলের সহিত সেই প্রাচীন পুষ্করিণীর তুষারশীতল জলে অবতরণ করিল এবং শৈবালগুচ্ছ আহরণ করিয়া আপনার ও মহানিহারস্বামীর মস্তক আবৃত করিল। উল্কাধারিগণকে পুষ্করিণীর ধারে আসিতে দেখিয়া তাহারা ধীরে ধীরে মধ্যস্থলে সরিয়া গেল। মহাপ্ৰতীহারের সেনাগণ পুষ্করিণীর তীরে আসিয়া সাবধানে বেণুকুঞ্জ সমূহ অন্বেষণ করিতে লাগিল। য়ে কুঞ্জের নিম্নে হরিবল ও ইন্দ্ৰলেখা দাড়াইয়াছিল, সেইস্থানে আসিয়া একজন প্রতীহার অপরকে কহিল, “দেখ, এইস্থানে দুইজন মনুষের পদচিহ্ন আছে।” দ্বিতীয় প্রতীহার কঠিল, “হয় ত কোন নাগরিক অভিসারে আসিয়াছিল ।” “ইন্দ্ৰলেখা নয় ত?” “দেখ ইন্দ্রলেখা কি সামান্তা রমণী ? সে মঙ্গরাজাধিরাজ কুমারগুপ্তের শ্বশ্রী, সে কি আর মহাপ্রতাহারের অপেক্ষায় এই দারুণ শীতে পুরাতন পুষ্করিণীর তীরে দাড়াইয়াছিল ? সে এতক্ষণ চতুরস্ববাহিত রথে মগধ পরিত্যাগ করিতেছে।” “সে আবার রথ পাইবে কোথায় ?” “হয় ত মহারাজাধিরাজ পাঠাইয়া দিয়াছিলেন ?” “মহারাজাধিরাজ ?” “হারে হ, তুই পাটলিপুত্রের প্রতীহার হইতে আসিয়াছিলি কেন ? মহারাজাধিরাজ যখন প্রতি সন্ধ্যায় ইন্দ্ৰলেখার গুহে অভিসার যাত্রা করিতেন, তখন মহাপ্রতীহারের আদেশে আমি ছদ্মবেশে ইন্দ্রলেখার গৃহে লুকাইয়া থাকিতাম।” “আমি শুনিয়াছিলাম যে, ইন্দ্রলেখার কন্যা মহাদেবী হইবে।” “মহারাজপুত্র আসিয়া না পড়িলে এতদিন হইত।” “তবে ইন্দ্ৰলেখা, কারাগারে গেল কেন?” “মহারাজপুত্র ও মহামন্ত্রীর চক্রান্তে ” “মহারাজাধিরাজ আদেশ করিলেই মহাপ্রতীহার ত তাহাকে মুক্তি দিতেন, তবে সে পলাইল কেন?” “দেখ ভাই, ইন্দ্রলেখ মহারাজাধিরাজের সাহায্য ব্যতীত কখনই কারাগার হইতে পলায়ন করিতে পারে নাই। আমার বোধ হয় প্রকাস্তে মুক্তির আদেশ দিলে, মহামন্ত্রী দুঃখিত হইবেন বলিয়া মহারাজাধিরাজ ইন্দ্ৰলেখার পলায়নের
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৩৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।