Ꮌ8br করুণা মালতীবিতানের লতায় আত্মগোপন করিয়া যুবরাজ তাহার দিকে চাহিয়া আছেন । রজনীগন্ধার স্যায় শুভ্ৰ বদনমণ্ডল লজ্জায় অরুণবরণ হইয়া উঠিল, অরুণা অবগুণ্ঠন টানিয়া দিলেন। স্কন্দগুপ্ত তখন লতাবিতান হইতে বাহির হইয়া কহিলেন, “অরুণ, আর একবার দেখি ” অবগুণ্ঠন বদ্ধিত হইল। যুবরাজ কি করিবেন বা কি বলিবেন স্থির করিতে না পারিয়া অরুণার দিকে পলকবিহীন নেত্ৰে চাহিয়া রছিলেন । বহুক্ষণ পরে যুবরাজ পুনরায় কঙ্গিলেন, “অরুণ, আমার একটি অনুরোধ রাখিবে ?” অবগুণ্ঠন আরও বাড়িল । অঙ্কুটস্বরে জিজ্ঞাসা হইল, “কি ?” “আমাকে রজনীগন্ধার মাল্য রচনা করিয়া দিবে ?” “দিব ।” যুবরাজ তথাপি স্থির হইয়া দাড়াইয়া রহিলেন ; তখন অবগুণ্ঠনবর্তী পুনরায় কহিলেন, “আপনি সরিয়া যান, এখনই কে আসিয়া পড়িবে।” “ক্ষতি কি ?” “ছি।” পরক্ষণেই পশ্চাতে পদশব্দ শ্রুত হইল, অরুণ অধিকতর লজ্জিত। হইয়া পশ্চাৎ ফিরিয়া দাড়াইলেন, যুবরাজ ফিরিয়া দেখিলেন জনৈক দণ্ডধর র্তাহার দিকে আসিতেছে। তিনি বিরক্ত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি চাহ ?” দণ্ডধর অভিবাদন করিয়া কহিল, “যুবরাজ ভট্টারকের জয় হউক, তৃণজাতি দ্বিতীয়বার যুদ্ধযাত্রার জন্ত প্রস্তুত হইতেছে, কপিশা হইতে মহারাজপুত্র দূত প্রেরণ করিয়াছেন, আপনাকে অল্পই যাত্রা করিতে হইবে।” “যাও, যাইতেছি।” দণ্ডধর প্রস্থান করিল। যুবরাজ অরুণাদেবীকে কহিলেন, “অরুণ, চলিলাম। যদি ফিরিয়া আসি তাহা হইলে সাক্ষাৎ হইবে – নতুবা নহে। আর একবার তোমার মুখখানি দেখিব।” মস্তকের অবগুণ্ঠন ধরিল, যুবরাজ দেখিলেন অরুণার নয়নদ্বয় অশ্রুপূর্ণ-রক্তাভ গণ্ডস্থল বহিয়া অশ্রুধারা প্রবাহিত হইতেছে। যুবরাজ পুনরায় কহিলেন, "অরুণ, হয় ত এই শেষ, আমার দিকে চাহিয়া
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৫৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।