> 28 করুণা দল আলোকে সহস্ৰ সহস্র পরিচারকের সম্মুখে যুবতীর প্রেমসম্ভাষণ অসঙ্গত, বিবেক বার বার বুদ্ধের কর্ণকুহরে এই কথা বলিতেছিল। কিন্তু সে কোমল স্পর্শ, সে মনোহর অঙ্গভঙ্গী, সে ভুবনমোহন রূপ, অমস্তার কেশতৈলের অপরূপ গন্ধ, তাহাঙ্গ আজানুলম্বিত তরঙ্গায়িত কৃষ্ণকেশরাশি ব্যতীত অন্য কোথাও উদ্ভূত হইতে পারে না । বারাণসীর পথে অমাবস্তার অন্ধকারময় রজনীতে প্রথম প্রহরান্তে অনন্ত কোথা হইতে আসিল ? কণ্ঠলগ্ন তরুণী পুনরায় জিজ্ঞাসা করিল, “নিষ্ঠুর ! আমাকে চিনিতে পারিলে না ?” প্লেীঢ় তখন ভাবিতেছিলেন, ভ্রাতৃভক্ত গোবিন্দ গুপ্ত একদিন বলিয়াছিলেন যে, দ্বিতীয়বার অনস্তার করকবলিত হইলে সমুদ্র হইতে সমুদ্র পর্যন্ত বিস্তৃত আৰ্য সমুদ্রগুপ্তের বিশাল সাম্রাজ্য নিমিষের মধ্যে ধ্বংস হইবে । ইন্দ্রলেখার চক্রান্তে, অনন্তার কোমলম্পর্শের মোহে, তিনি একদিন স্কন্দগুপ্তেব মাতাকে আর্যাপট্ট হইতে দূর করিতে চাহিয়াছিলেন। সুদূর পুরুত্বপুর হইতে গোবিন্দগুপ্ত সে মোহ দূর করিতে পাটলিপুত্রে আসিয়াছিল। বৃদ্ধ পিতৃব্য গুপ্তসাম্রাজ্যের পূজনীয় মহামন্ত্রী, দামোদর শম্মা উন্মত্ত হইয়া উঠিয়াছিলেন। অনন্তার জন্ত পাটলিপুত্রের অভিজাত সম্প্রদায় ঝটিকাতাড়িত সমুদ্রবক্ষের ন্তায় বিক্ষুব্ধ হইয়া উঠিয়াছিল। আবার অনন্তা ! কোথা হইতে আসিল ? কেমন করিয়া ংবাদ পাইল ? হঠাৎ বৃদ্ধের শীর্ণ গণ্ডস্থলে বিন্দুদয় উষ্ণবারি পতিত হইল। পরমেশ্বর পরমভট্টারক পরমবৈষ্ণব মহারাজাধিরাজ চমকিত হইয়া উদ্ধে দৃষ্টপাত করিলেন, দেখিলেন, ফুল্লারাবন্দ তুল্য কোমল গণ্ডস্থল বহিয়া অশ্রুধারা প্রবাহিত হইতেছে। তাহা দেখিয়া কুমারগুপ্তের সঙ্কল্প ভাসিয়া গেল, বুদ্ধ বহুমূল্য ক্ষৌমবস্ত্ৰ দিয়া তরুণীর অরুণবিশ্রান্ত নয়নযুগল মুছাইয় দিলেন এবং কহিলেন, “ছি অনন্তা, কঁাদিও না, আমি ভুলি নাই ।” মুরাবিহবলা লজ্জাহীন তরুণী সৰ্ব্বসমক্ষে বৃদ্ধের মুখচুম্বন করিল, বৃদ্ধ সম্রাটু
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৬০
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।