>やや করুণ ধাবিত হইল। রথ প্রাসাদের তৃতীয় তোরণে প্রবেশ করিবার পূৰ্ব্বে দেীবারিক অন্তঃপুরদ্বারে উপস্থিত হইল এবং একজন দণ্ডধরকে নীলমণিযুক্ত একটি অঙ্গুরীয়ুক প্রদান করিল। দণ্ডধর অঙ্গুরীয়ক লইয়া অন্তঃপুরে প্রবেশ করিল । । শু্যামামন্দিরে আরত্রিকের আয়োজন শেষ হইয়াছে, ধূপ-ধূমে পাষাণময় মন্দিরান্তরাল সহস্র প্রদীপের উজ্জল আলোকসত্ত্বে ও অন্ধকারময় হইয়া উঠিয়াছে, পুরোহিত দীপমালা ইস্তে আসনে উঠিয়া দাড়াইয়াছেন । সহসা জনতা ভেদ কুরিয়া সেই দণ্ডধর মন্দিরান্তরালে প্রবেশ করিল এবং ধ্যানমগ্ন মহাদেবার ক্রোড়ে অঙ্গুরায়ক নিক্ষেপ করিল। মহাদেবী বিস্মিতা ও চমকিত হইয়া নয়ন উন্মীলন করিয়া দেখিলেন, তাহার হস্তে নীলমণিযুক্ত অঙ্গুরীয়ক পতিত রহিয়াছে। সহসা তাহার মুখ পাণ্ডুবৰ্ণ হইয়া গেল, তিনি আসন ত্যাগ করিয়া প্রতিমার দিকে অগ্রসর হইলেন। তাঙ্গর পাশ্বে অরুণা বসিয়াছিলেন, তিনি মহাদেবীর অবস্থা দেখিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “মা, কি হইয়াছে ?” পালিত কন্যার কণ্ঠস্বর পট্টমঙ্গদেবীর কর্ণে প্রবেশলাভ করিল না, তাহাকে প্রতিমার দিকে অগ্রসর হইতে দেখিয়া পুরোহিত পথ হহঁতে সরিয়া দাড়াইলেন। সমবেত কুলমহিলাগণ ভীতা ও সন্ত্রস্ত হইয়া আসন ত্যাগ করলেন । ক্ষণকালমধ্যে জনকোলাহলমুখরিত মন্দিরান্তরাল শ্মশানের স্থায় নীরব হইল । সহসা সেই নীরবতা ভঙ্গ করিয়া অন্তরালের বঠিদেশ হইতে বামাকণ্ঠোথিত আৰ্ত্তনাদ শ্রুত হইল, কে কঠিল, “দেবি,- দেবি – মহারাজাধিরাজ–অনন্ত আসিয়াছে ” সহসা প্রতিমার হস্তস্থিত তীক্ষুধার খড়গ হস্তচু্যত হইল, সঙ্গে সঙ্গে মহাদেবীর ছিন্নশীর্ষ হ্যামাপদযুগল চুম্বন করিল। রক্তরুধির শ্বেত মৰ্ম্মর ছাদন প্লাবিত করিল, মহাদেবী স্বহস্তে আর্য্যপট্রের পথ প্রশস্ত করিলেন ।
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৭২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।