ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ >b-> তিনি আসন ত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাড়াইলেন। তাল, দেখিয়া মদ্যপ কহিল, “নাতিনী, ক্রোধ পরিত্যাগ কর, তোমার সচিত রসালাপ করিতে আসিয়াছি । চন্দ্রসেনকে বুড় মনে করিও না, এখন পাটলিপুত্র নগরে অনেক সুন্দরী তাহাকে পাইবার জন্য লালারিত।” উপাসিক আসন ত্যাগ করিয়া গুহকোণে আশ্রয় গ্রহণ করিলেন । চন্দ্রসেন পুনৰ্ব্বার কহিল, “নাতিনী, তোমার নাম কি ভাই ?—যুথিকা, মল্লিক' না মাল গ্ৰী ? অমন রূপে আর কোন নাম মানাইবে না।” রমণী প্রাচীরের দিকে মুখ ফিরাইয় দাড়াইল । তখন মদ্যপ অস্থিরপদে অগ্রসর হইয়া তাঙ্গর হস্তধারণ করিল, সুবর্তী কাতরকণ্ঠে ডাকিয়া উঠিল, “পিতা ।” - পালিত কস্তার কাতরকণ্ঠের আহবান ময়রময় শূন্ত প্রাসাদের কক্ষে কক্ষে প্রতিধ্বনিত হইল কিন্তু তাঙ্গ তরুণী অনস্তার রূপসাগরে আকণ্ঠনিমগ্ন, বৃদ্ধ সমাটের কর্ণকুহরে প্রবেশলাভ করিল না। চন্দ্ৰসেন বলপূৰ্ব্বক রমণীর হস্তাকর্ষণ করিতে করিতে কহিল, “নীতিনী, রাগ কর কেন ভাই ? তুমি আমার নিকটে উপবেশন কর, আমি কুসুমদাম দিয়া তোমাকে অপরূপ অলঙ্কর রচনা করিয়া দিব ।” তখন উপায়াস্তর না দেখিয়া রমণী কাতরকণ্ঠে কঠিল, “দেব, আপনি পিতা, আমার হস্ত পরিত্যাগ করুন।” চন্দ্রসেন হাসিয়া কঠিল, “তাহাও কি হয় ? নাতিনা, কুসুমপেলব অঙ্গস্পর্শে ধন্য হইয়াছি, সে সুখে বঞ্চিত করিবে কেন ?" যুবতী হস্ত মুক্ত করিবার চেষ্টা করিতে,করিতে অশ্ৰুরুদ্ধকণ্ঠে কহিল, “দেব, আমি আপনার কন্ঠ, হস্ত পরিত্যাগ করুন ? মদ্যপ বিকট হাস্ত করিয়া কহিল, “সম্পর্কবিরুদ্ধ কথা বল কেন ভাই ? তুমি কুমার গুপ্তের কন্যা, আমার নাতিনী। ভাল, তোমার অনুরোধে হস্ত পরিত্যাগ করিলাম ” মদ্যপ হস্ত পরিত্যাগ করিয়া বসনাঞ্চল গ্রহণ করিল। আদ্র কেশপাশ হইতে মস্থণ অংশুক-বসন সরিয়া গেল, অবগুণ্ঠনমুক্ত বদনমণ্ডল দর্শন করিয়া চন্দ্রসেন বলিয়া উঠিল, “নাতিনী,
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/১৮৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।