নবম পরিচ্ছেদ Ꮠ8Ꮔ - সেই রজনীতে তৃতীয় প্রহরের শেষভাগে কপোতিক সঙ্ঘারামে মহাবিচারে মহাবিচারস্বামী মগধমগুলের সঙ্ঘস্থবিরপদ লাভ করিয়া ভবিষ্যৎ চিন্তা করিতেছিলেন। মহাবিহার জনশূন্য, প্রশস্ত গর্ভগৃহের কোণে একটি বৃঙ্গং ত্বতের প্রদীপ জলিতেছিল, তাঙ্গতে অন্ধকার দূর না হইয়া অধিকতর ঘন বোধ হইতেছিল । অকস্মাৎ গর্ভগৃহের মুক্তদ্বারে শুলবস্ত্রারত দীর্ঘাকার মন্ত্যমূৰ্ত্তি দৃষ্ট হইল, নূতন সঙ্ঘস্থবির শিহরিয়া উঠিলেন, তাহা দেখিয়া আগন্তুক মস্তকের আবরণ দূর করিয়া উচ্চ হাস্ত করিয়া উঠিল । তখন সঙ্ঘস্থবির হরিবল সন্তান্তবদনে কহিলেন, “কে ও, ইন্দ্রলেখে? তোমার পাদস্পর্শে মহাবিহার আজি পবিত্র হইল।” প্রৌঢ় সুনরী কলঙ্গষ্ঠে গর্ভগৃহ মুখরিত করিয়া বলিয়া উঠিল, “তবু ভাল, চিনিতে পারিলে ! তুমি কি মনে করিয়াছিলে যে, আমি প্রেতিনী ?” “সে কি কথা দেবি, আমি নয়ন মুদিয়া তোমার অপরূপ রূপ ধান করিতেছিলাম।” “তবে শিক্টরিয়া উঠিলে কেন ?” “মনে হইতেছিল, যেন তোমাকে স্পর্শ করিয়াছি।” “বলি রসরাজ, রসিকতা ছাড়িবে কবে ?" “যতদিন তোমার রূপ-রস-গন্ধ ধ্যান করিব ততদিন ত নহে ” “বড় শুভ সংবাদ আনিয়াছি এখন কি পুরস্কার দিবে বল ?” “ইন্দ্রলেখে, দেহ-মন-প্রাণ সমস্তই ত চরণারবিন্দে সমর্পণ করিয়াছি, আর কি আছে যে দিব ?” “যাহা চাহিব তাহা দিবে ?” “দিব।” “অতি শুভ সংবাদ, স্কুন্দ গুপ্ত হুণহস্তে বন্দী, হর্ষ গুপ্ত, ভানুমিত্র, বন্ধুবন্ম প্রভৃতি ইচ্ছা করিয়া স্কন্দগুপ্তের সহিত বন্দী হইয়াছে, আর হণসেনা বালীক, কপিশা ও গন্ধার অধিকার করিয়াছে।” “অতি সুন্দর ইন্দ্রলেখে, অতি সুন্দর, তোমার দ্যায় সুন্দর।” “মরণ আর কি ?” “দেবি, তোমাকে কিছু অতিরিক্ত পুরস্কার দিব।” “আর অতিরিক্তে কাজ নাই যাহা চাহিব তাহা.দিলেই হইল।” “লইবে না ?” “তুমি মর, রাত্রি শেষ হইয়াছে, আমি প্রাসাদে চলিলাম।”
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২৫৩
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।