ত্রয়োদশ পরিচ্ছেদ îፃ » সম্রাট আর্য্যপট্ট হইতে অবতরণ করিয়া পুত্রকে আলিঙ্গন করিলেন এবং ভূমিতে দৃষ্টিনিবদ্ধ করিয়া অনন্তার দিকে অঙ্গুলি চালনা করিয়া কছিলেন, “পুত্র, তোমার মাতা ।” পশ্চাৎ হইতে বজ্রনাদে কে বলিয়া উঠিল, “বিমাতা, কিন্তু পট্টমহাদেবী নহে ।” সকলে বক্তার দিকে চাহিয়া দেখিল, বৃদ্ধ মহামন্ত্রী বেদীর উপরে উঠিয়া দাড়াইয়াছেন । কোষমুক্ত আসি কোষে পুনঃস্থাপন করিয়া স্কন্দ গুপ্ত বিমাতাকে প্রণাম করিলেন। তাহ দেখিয়া কুদ্ধ নবীন পট্টমহাদেবী রোসরুদ্ধকণ্ঠে বলিয়া উঠিলেন, “পুঞ্জ, তুমি আমাকে অভিবাদন করিলে না ?” বেদার উপর হইতে দামোদর শৰ্ম্ম বলিয়া উঠিলেন, “তুমি বিমাতা, সেইজন্য স্কন্দ তোমাকে প্রণাম করিয়াছে কিন্তু তুমি মগধ সাম্রাজ্যের যুবরাজভট্টারকের অভিবাদনের অযোগ্য ।” বিশাল সভামণ্ডপ নীরব, সহসা অলিন্দ হইতে একজন বৃদ্ধ মঙ্গনায়ক বলিয়া উঠিলেন, “স্বৰ্গীয়া পট্টমহাদেবীর জয় ।” সঙ্গে সঙ্গে উপস্থিত জনসঙ্ঘ স্কন্দ গুপ্তের মাতার জয়ধ্বনি করিয়া উঠিল, সভামণ্ডপের বহির্দেশে সমবেত নাগরিক ও সেনাগণ স্বর্গগতা পট্টমহাদেবীর পবিত্র নাম গ্রহণ করিয়া জয়ধ্বনি করিল। জয়ধ্বনি থামিলে স্কন্দ গুপ্ত আকাশের দিকে চাহিয়া কোষমুক্ত অসিশীর্ষ ললাটে স্পর্শ করাইলেন, সঙ্গে সঙ্গে সমবেত নায়ক ও মহানায়কগণের অসি কোষমুক্ত হইল। যাতারা কখন নবীনা পট্টমহাদেবীকে অভিবাদন করে নাই, তাহারা স্বর্গগতা পট্টমহাদেবীর উদ্দেশে আকাশের দিকে চাহিয়া যথারীতি অনস্তাদেবীর সম্মুখে অভিবাদন করিল। আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে বৃদ্ধ মহামন্ত্রী বলিয়া উঠিলেন, “মাতা ! পুত্রগণ অভিবাদন করিতেছে, স্বদেশের কল্যাণকামনায় " আত্মবিসর্জন দিয়া যেখানে গিয়াছ, সেই স্থান হইতে আশীৰ্ব্বাদ কর।” নবীন পট্টমহাদেবী এতক্ষণ মুন্ত্রমুগ্ধার স্তায় বসিয়াছিলেন । এই সময়ে তিনি আর্য্যপট্ট ত্যাগ করিয়া উঠিয়া দাড়াইলেন এবং বৃদ্ধ সম্রাটের বস্ত্রাকর্ষণ করিয়া কহিলেন, “তোমার পুত্র আমাকে অভিবাদন করিবে
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/২৭৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।