অষ্টম পরিচ্ছেদ Ó8ማ বুদ্ধ সন্ন্যাসী এই বলিয়া দেবকুলের পাষাণাচ্ছাদিত অঙ্গনে উপবেশন করিয়া রেখাঙ্কন করিতে আরম্ভ করিল এবং ক্ষণকাল প্লরে উঠিয়া বলিল, "বিধিলিপি অখণ্ডনীয়, তুমি কি করিবে মা ? আর একবার বলি শুন, বুদ্ধের কথা অবিশ্বাস করি ও না ।” “সুথা, পিতা, বৃথা । জগতে একটিমাত্র সাধ অপূর্ণ আছে, পিতা অভাগিনীর সে সাধ পূর্ণ করিবেন কি ?” “কি সাধ, মা ?” “মঠ-সীমায় যে সহকার-তরুতলে হারানিধি ফিরিয়া পাইয়াছিলাম, সেই স্তানে--” “ম, তাহাই হইবে, কিন্তু মা, শতদ্রু যুদ্ধের শত অশ্বারোঈ তোমার রক্ষায় নিযুক্ত আছে, তাহাদিগকে কি বলিবে ?” “আহবান করুন, তাগদিগের নিকট বিদায় লইব ।” “আর একটি অনুরোধ আছে, পিতা ?” “কি মা ?” “আমার মৃগযুথ—” এতক্ষণে অরুণার কণ্ঠ রুদ্ধ হইল, একটি মৃগশিশু অঙ্গনে প্রবেশ করিয়া অরুণাদেবীর হস্তে মূখ লুকাইল, অশ্রুধারায় তুষারশুভ্ৰ গগুদ্বয় প্লাবিত হইল। বুদ্ধ সন্ন্যাসী ধীরে ধীরে কছিলেন, “মা, এ বৃদ্ধ যতদিন জীবিত থাকিবে, ততদিন বাসুদেবকে বিস্তুত হইয়া ও তোর মৃগযুথ পালন করিবে ।” অপরাহ্লে সেই সতকার-তরুতলে বিস্তৃত চিত রচিত হইল, মঠবাসী মানব ও মৃগযুথ অরুণার শেষ শয্যা বেষ্টন করিয়া দাড়াইল । সদ্যস্নাত শুভ্রকৌষেয়বসনপরিহিতা অরুণ চিতার দিকে অগ্রসর হইলেন, বান্ধবীর বিপদ বুঝিয়া মূক মৃগযুথ চারিদিক হইতে র্তাঙ্গকে বেষ্টন করিল। তাহাদিগের প্রত্যেককে আলিঙ্গন ও চুম্বন করিয়া অরুণ চিতা স্পশ করিলেন। তখন শতদ্রুর যুদ্ধের শ্বতবীর তাহাকে অভিবাদন করিল। সপ্তবার চিতা প্রদক্ষিণ করিয়া পটুমহাদেবী লৌহশিরস্ত্রাণ অঙ্কে লইয়া কাষ্ঠ-শয্যায় উপবেশন করিলেন । অগ্নি জলিল, একদিন তাঙ্গর শিখা বক্ষু ও বালীকার পরপারে ভূণগ্রাম ও চুণ-নগর দগ্ধ করিয়াছিল। চিতা নিৰ্ব্বাপিতপ্রায়, দুরে শালিশস্তক্ষেত্রে বৃদ্ধ বৈষ্ণব সন্ন্যাসী উপবিষ্ট,
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩৫১
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।