○ケ8 করুণা সশব্দে নগরতোরণ মুক্ত হইল, বন্ধুবৰ্ম্ম নগরহারে প্রবেশ করিয়া শঙ্খধ্বনি করিলেম । দেখিতে দেখিতে পঞ্চসহস্ৰ সেনা নগরহারের রাজপথে সমবেত হইল। বন্ধুবৰ্ম্ম তখন তাহাদিগকে সম্বোধন করিয়া কছিলেন, “বন্ধুগণ, সংবাদ পাইলাম, মহারাজাধিরাজ স্বৰ্গারোহণ করিয়াছেন। পুরগুপ্ত এখন মগধের অধীশ্বর, তিনি স্বেচ্ছায় অৰ্দ্ধ আর্য্যাবৰ্ত্ত চুণরাজকে প্রদান করিয়াছেন, আর কিসের জন্ত যুদ্ধ করিব ? বহুদিন পরে আর্যাবৰ্ত্তে শান্তি স্থাপিত হইল। ভরসা করি ইহা দীর্ঘকালস্তায়ী হইবে । স্কন্দগুপ্ত আমাকে সাম্রাজ্যের মহাবলাধিকৃত নিযুক্ত করিয়াছিলেন, সে সম্রাটুও নাই, সাম্রাজ্য ও নাই, তোমরা যথা ইচ্ছা চলিয়া যাও।” সমবেত সৈনিকগণ স্থির হইয়া দাড়াইয়া রহিল, অৰ্দ্ধদও পরে একজন গোল্মিক জিজ্ঞাস করিল, “মহারাজ, আপনি কি মালবে ফিরিবেন ?” বন্ধুবন্মা ঈষৎ হাস্ত করিয়া কহিলেন, "ভাই, মালব বহুদূর, আমার মহারাজ আমাকে আহবান করিয়াছেন, আমি তাহার নিকট যাইব, তোমরা দেশে ফিরিয়া যা ও ” প্রত্যুত্তরে বৃদ্ধ ঈষৎ হাসিয়া কহিল, “মহারাজ, বহুদিন যুদ্ধ করিয়া ক্লান্ত হইয়াছি, কিছুদিন বিশ্রাম করিতে চাহি। প্রভু, মগধ বহুদূর, জরাজীপ চরণ অতদুর চলিতে চাহে না। যে মগধে জন্মিয়াছিলাম, সে মগধ আর নাই, যে মগধ আছে, প্রাণ তাহাতে ফিরিতে চাহে না !” তখন বন্ধুবৰ্ম্মা বলিয়া উঠিলেন, “তবে শুন, ইন্দ্রপালিত বাহুলাকাতীরে বিষ্ণুপদলাভ করিয়াছে; প্রহরমধ্যে হ্ণসেনা নগরহারের তোরণে আসিবে, স্বর্ণগত সম্রাটু আমাকে উত্তরাপথের তোরণরক্ষায় নিযুক্ত করিয়াছিলেন, পুরাতন কুকুর লবণ বিস্তৃত হয় নাই, বিশ্ববৰ্ম্মার পুত্র তোরণ পরিত্যাগ করিতে পারিবে না । যে চাহ, পুরগুপ্তের মগধে ফিরিয়া যাও।” কেহ উত্তর দিল না, পঞ্চসহস্র অসি কোষমুক্ত হইয়া সশব্দে লৌহময় শিরস্ত্রাণ স্পর্শ করিল। তখন বন্ধুবৰ্ম্ম হাসিং মুরারিকে কছিলেন,
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৩৮৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।