সপ্তম পরিচ্ছেদ 8 X অরুণা কহিলেন, “দিদি, পিতা-পিতা বলিয়া পাঠাইলেন যে তাহার অবসর নাই ।” উভন্সে অলিন্দ ত্যাগ করিয়া শ্রাম-মন্দিরের দিকে চলিলেন । শ্রাম। মন্দিরের নীরব তোরণে এক একজন মহল্লিকা দাড়াইয়া আছে। মণ্ডপে, স্তম্ভের অন্তরালে তুই তিনজন মহল্লিক' আত্মগোপন করিয়া আছে । মন্দিরদ্বার উন্মুক্ত, পট্টমহাদেবীর পরিচারিকা মন্দিরের বহি দেশে বিয়ঃ বদনে বসিয়াছিল, ভগিনীদ্বয়কে দেখিয়া সে উঠিয়া দাড়াইল । মন্দির মধ্যে একটি স্বতের'প্রদীপ জলিতেছে, পাযাণমী শুমামষ্টির পদতলে একটি শুভ্ৰবস্ত্রাবৃত নারীদেহ পতিত রহিয়াছে। দ্বারে দাড়াইয়া অরুণাদেবী ডাকিলেন, “মা” কিন্তু কোন উত্তর পাইলেন না । তখন তিনি কহিলেন, “ম, গৌড় হইতে দিদি আসিয়াছে।” তাঙ্গর পশ্চা হইতে ব্যাকুলকণ্ঠে উচ্চারিত হইল, “মা”। আর্য্যাবর্তের অধিশ্বরী গুপ্ত-সাম্রাজ্যের পটুমহাদেবী আদ্র মন্দিরতলে উঠিয়া বসিলেন এবং ভল্লুকণ্ঠে কতিলেন, “কে, করুণ ?” . পরমুহূৰ্ত্তে করুণা ছুটিয়া গিয়া মহাদেবীর কণ্ঠলিঙ্গন করিলেন, উভয়ে আলিঙ্গনবদ্ধ হইয়। আর্দ্র মন্দিরতলে শীতল আচ্ছাদনে বসিয়া অশ্রু বিসর্জন করিতে লাগিলেন । এইরূপে দুইদণ্ড কাটিয়া গেল। বহুক্ষণ পরে অরুণাদেবী মন্দিরদ্বারে দাড়াইয়া কছিলেন, “দিদি, পূজার সময় হইয়াছে, পুরোহিত আসিয়াছেন।” তখন মহাদেবী পালিত কন্যার স্বন্ধে ভর দিয়া মন্দির হইতে নির্গত হইলেন। পরিচারিকাগণ মন্দিরে প্রবেশ করিয়া, পূজার আয়োজন করিতে লাগিল। মহাদেবীর সহিত মণ্ডপে আসিয়া করুণ কতিলেন, “মা, এমন করিয়া কয়দিন বাচিবেন ?” উত্তর হইল, “অনেক দিন বাচিয় আছি করুণ,—বাচিয়া আছি বলিয়াই সহ্য করিতে হইল, আর না।” “কেন মরিবে মা ? আমাদিগকে কাহার কাছে রাখিয়া যাইবে ?” "কেন মরিব ? করুণ, বিনা অপরাধে কবে কোন পট্টমহাদেবী
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৪৭
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।