bro করুণা কিরিব না এ কথা শুনিলে মন স্থির রাখিতে পারি না । ঠাকুরাণি, অনেক দিম দেশ ছাড়িয়া আসিয়াছি, গৃহে ফিরিয়া চল ।” - মহাদেবী ও অরুণা মণ্ডপে পুরোহিতের সঙ্গিত বাক্যালাপ করিতেছিলেন। চারিদিকে দৃষ্টিপাত করিয়া করুণাদেবী কঠিলেন, “ঠাকুর, ইঙ্গ আমার পিত্রালয়, আমি নিজে মুখ ফুটিয়া গৃহে প্রত্যাবর্তনের কথা কেমন করিয়া বলিব ? তুমি উহাকে গিয়া বল। তোমার কথা শুনিয়া আমার মন ব্যাকুল হইয়া উঠিয়াছে । আহা আমার পুষ্পোপ্তান বোধ হয় এত দিন শুকাইয়া গিয়াছে : “ঠাকুরাণি, তুমি ত সোজা কথা বলিয়া দিলে উহাকে গিয়া বল, আমি এখন তোমার উহাকে কোথা গিয়া খুজিয়া পাই ? এ কি গোড়নগর ক্ষে পথঘাট পরিচিত, স্বচ্ছন্দে যথা ইচ্ছা চলিয়া যাইব ? পাটলিপুত্র নগর মনুষ্যের অরণ্য বিশেষ। আর বিশেষতঃ তোমার এই পিত্ৰালয়, এটি ত প্রাসাদ নহে এটি প্রাসাদের অরণ্য । ইহাতে এক একজন সম্রাট এক এক সহস্র প্রাসাদ নিৰ্ম্মাণ করিয়া গিয়াছেন। দণ্ডধর দেীবারিকদিগের গৃহগুলা আমাদের গৌড়ের প্রাসাদ অপেক্ষ বড়। আমি অন্তঃপুর হইতে বাহির হইলেই পথ হারাইয়া ফেলিব, শেষে কি পুনরায় মহাপ্রতীহারের কারাগারে যাইব ?” ঋষভদেবের কথা শুনিয়া করুণাদেবী হাসিয়া উঠিলেন, তাহ শুনিয় মণ্ডপ হইতে মহাদেবী জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হইয়াছে করুণা ?” করুণাদেবী ব্যস্ত হইয়া যুক্তকরে কহিলেন, “ঠাকুর, আপনার পায়ে পড়ি মাতাকে দেশে ফিরিবার কথা যেন বলিয়া ফেলিবেন না ! তাহা হইলে আমি লজ্জায় মরিয়া যাইব ।” “ঠাকুরাণি, তোমার দিব্য, কথাটা উদর মধ্যে রাখিবার বিশেষ চেষ্টা করিব কিন্তু—” “আবার কিন্তু কি ?” “কিন্তু—যদি সহসা মুখ হইতে বাহির হইয়া যায়?” “কেন বাহির হইবে, মুখ সাবধান।” “তুমি বিষম বিপদে ফেলিলে ঠাকুরাণি । একেই ত রাজা মহারাজ দেখিলে আমার
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৮৬
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।