!করুণ سرسيا কোন আবশুক নাই।” “প্ৰভু, আপনার জীবন বহুমূল্য, গুপ্ত ঘাতকের হস্তে আপনাকে নিহত হইতে দিব না ।” . মুরারি এই বলিয়া অগ্রবর্তী হইল। গোবিন্দগুপ্ত অগ্রসর হইতে গিয়া দেখিলেন যে ঋষভদেব দৃঢ়মুষ্টিতে তাহার বস্ত্র ধারণ করিয়া আছেন ; মহারাজপুত্র মৃঢ়স্বরে জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি হইয়াছে ?” “মহারাজ, প্রাসাদে ফিরিয়া চলুন।" “কেন ?” “রামকবচ আনি নাই ।” “রামকবচ কি হইবে ?” “উপদেবতার উপদ্রব – ” “ঠাকুর, এখন আমরাই উপদেবতা ।” “রাম রাম—” - মুরারি হাসিয়া কহিল, “ঠাকুর, যদি বিলম্ব কর তাহা তইলে তোমাকে এই স্থানে রাখিয়া যাইব ।” ব্রাহ্মণ বাক্যব্যয় না করিয়া তাহাদিগের সহিত চলিতে আরম্ভ করিলেন । আম্রকানন-প্রাস্তে একটি ক্ষুদ্র দেবমন্দির ছিল, সকলে তাহার ভিতর প্রবেশ করিলেন। মুরারি মন্দিরদ্বার রুদ্ধ করিয়া প্রদীপ জালিল এবং মন্দিরের মধ্যস্থল হইতে কাষ্ঠখণ্ড সরাইয়া ফেলিল। কাষ্ঠখণ্ডে সুড়ঙ্গদ্বার আবৃত ছিল, প্রদীপহুস্তে মুরারি সুড়ঙ্গপথে প্রবেশ করিলে মহারাজ-পুত্র ও ঋষভদেব তাহার অনুসরণ করিলেন । মহারাজ-পুত্ৰ কাষ্ঠখণ্ডদ্বারা সুড়ঙ্গমুখ পুনরায় আবৃত করিলেন। মুড়ঙ্গপথের সোপানাবলী অবলম্বন করিয়া সকলেই ভূগর্ভে অবতরণ করিলেন । যেস্থানে সোপানশ্রেণী শেষ হইয়াছে, সেই স্থানটি পাষাণনিৰ্ম্মিত একটি প্রশস্ত কক্ষ, সকলে কক্ষে প্রবেশ করিবামুত্রে প্রদীপ নিৰ্ব্বাপিত হইল। ঋষভদেব চীৎকার করিবার চেষ্টা করিতেছিলেন কিন্তু অন্ধকারে কে তাহার মুখে হস্তাপণ করিল এবং কর্ণমূলে কহিল, “শব্দ করলে মরিবে !” মুরারি অন্ধকারে অগ্রসর হইল, ঋষভদেবকে অগ্রবর্তী করিয়া গোবিন্দগুপ্ত পশ্চাদ্বত্তী হইলেন। সহসা বহু দূরে ক্ষীণ আলোকরেখা দৃষ্ট হইল, তাহা দেখিয়া মুরারি দাড়াইল । গোবিন্দগুপ্ত জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি ?”
পাতা:করুণা - রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায়.djvu/৯৪
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।